নিত্যপণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি: অসৎ ব্যবসায়ীরা কি ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকবে?
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অর্থনীতির সাধারণ সূত্র বলে, বাজারে কোনো পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকলে সেই পণ্যের দাম বাড়ে; একইভাবে সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলে দাম কমে। কিন্তু অসৎ ব্যবসায়ী এবং বাজার সিন্ডিকেটের কারণে এদেশের বাজারে এখন অর্থনীতির এ সূত্র অকার্যকর হয়ে পড়েছে। আলুর কথাই ধরা যাক। বাজারে পর্যাপ্ত নতুন আলু উঠেছে। পাশাপাশি পুরোনো আলুর সরবরাহও প্রচুর। তারপরও বাড়ছে আলুর দাম। কদিন আগে যে আলু বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৫৫ টাকায়, বৃহস্পতিবার তা কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হয়েছে ৬০ টাকায়। শুধু আলু নয়, বাজারে ঘাটতি না থাকলেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল, ব্রয়লার মুরগি ও ডিম। দেশি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলেও দাম এখনো লাগামছাড়া। বোঝা যাচ্ছে, বাজারে সিন্ডিকেট এখনো রয়েছে বহাল তবিয়তে। বস্তুত সিন্ডিকেট ভাঙতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ। সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের বাজারব্যবস্থা। বলা যায়, কোনো নিত্যপণ্যের ব্যবসাই এখন আর সিন্ডিকেটমুক্ত নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাজারে সিন্ডিকেটের কারসাজি চলছে, অসৎ ব্যবসায়ীরা অসাধু পন্থা অবলম্বন করে অতি মুনাফা লুটছে-এসব কি দেখার কেউ নেই?
বস্তুত অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই দিন দিন তাদের লোভ বাড়ছে, তারা হয়ে উঠছে বেপরোয়া। বাজার তদারকির কথা শোনা গেলেও বাস্তবে এ ধরনের তৎপরতা কোনো বাজারেই দৃশ্যমান নয়। মনে রাখতে হবে, এই অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা অপরাধী, তাদের শক্ত হাতে দমন করা জরুরি। বাজারে দিনের পর দিন সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা চলতে দেওয়া যায় না। এদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে অভিযান শুরু করা দরকার। পাশাপাশি বাজার তদারকি সংস্থার উদ্দেশে আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নিত্যপণ্যের প্রতিটি বাজারে নিয়মিত নজরদারির ব্যবস্থা করুন। প্রয়োজনে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানো হোক। চিহ্নিত করা হোক সিন্ডিকেট। অসৎ ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা করে আইনের আওতায় আনা হোক। এ ধরনের কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। পাশাপাশি টিসিবিকে সক্রিয় করুন। সময়মতো পণ্য আমদানি করুন। দেখবেন অতি মুনাফাখোরদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হয়ে গেছে। আর তা না পারলে সেটা বাজার তদারকি সংস্থা ও সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা বলে পরিগণিত হবে। প্রশ্ন উঠবে সংশ্লিষ্টদের সততা ও আন্তরিকতা নিয়ে।