হার্টের রিং সরবরাহে জটিলতা, ন্যায্য দামে প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মূল্য নির্ধারণে জাতীয় নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি এমন অজুহাতে ২৪টি কোম্পানির হার্টের স্টেন্ট (রিং) বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ।
পুনরায় মূল্য সমন্বয় না হওয়া পর্যন্ত গতকাল থেকে এটি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন তারা। তারা বলেছেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরসহ নিয়মিত হৃদরোগের অস্ত্রোপচার হয় এমন হাসপাতালেও তারা চিঠি ও ই-মেইলের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দেবেন। জীবনরক্ষাকারী এ চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট হলে অসংখ্য মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার হার্টের রিংয়ের সর্বোচ্চ খুচরামূল্য নির্ধারণ করে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এতে বলা হয়, হৃদরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হার্টের রিংয়ের দাম ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, দেশের কয়েকটি হাসপাতালে ১৮ হাজার টাকার হার্টের রিং দেড় লাখ টাকা থেকে শুরু করে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করা হয়। এ কাজে কিছু অসাধু চিকিৎসকও জড়িত রয়েছেন। জানা যায়, একটি সিন্ডিকেট হার্টের রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে রিংয়ের প্রকৃত দামের চেয়ে ১০ গুণেরও বেশি আদায় করছে।
অতীতে দেশের একেক হাসপাতালে হার্টের রিংয়ের দাম ছিল একেকরকম। এ প্রেক্ষাপটে ২০১৭ সালে দাম সমন্বয়ে জাতীয় নীতিমালা তৈরি করা হয়। সেই সময় ১৭ সদস্যের কমিটি করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ওই কমিটি ২৮ ধরনের রিংয়ের সর্বোচ্চ খুচরামূল্য নির্ধারণ করে দেয়। সেই নির্ধারিত দামেই দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের রোগীর কাছে রিং বিক্রি করে আসছিল ব্যবসায়ীরা। কয়েক দফায় ডলারের দাম বাড়ায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নতুন করে রিংয়ের দাম সমন্বয়ের উদ্যোগ নেয়। চলতি বছরের জুন ও আগস্টে দুই দফায় মার্কআপ ফর্মুলা তথা জাতীয় নীতিমালা অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাবোট ল্যাবরেটরিজ, বোস্টন সায়েন্টিফিক, মেডট্রোনিক কোম্পানির রিংয়ে মূল্য সমন্বয় করা হয়। এ খাতের ব্যবসায়ীদের একটি অংশের অভিযোগ-১৩ ডিসেম্বর ২৪টি ইউরোপিয়ান কোম্পানির হার্টের রিংয়ের দাম মার্কআপ ফর্মুলা না করে কিছু চিকিৎসক এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তার ইচ্ছামতো নির্ধারণ করা হয়েছে। তারা বলেছেন, কয়েকদিন আগে হার্টের রিংয়ের সর্বোচ্চ খুচরামূল্য নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তাতে কিছু ব্যবসায়ী বাড়তি সুযোগ পাবেন। এ অভিযোগ খতিয়ে দেখা দরকার। জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা সরঞ্জাম বা ওষুধের দাম নির্ধারণে যাতে কোনোরকম কারসাজি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।