Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

এসডিজি বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ

অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এসডিজি বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ

জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ সাফল্য দেখিয়েছে। এমডিজির মূল লক্ষ্য চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূল, সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন এবং লিঙ্গসমতা অর্জন ও নারীর ক্ষমতায়ন-এসব ক্ষেত্রে পুরো লক্ষ্য অর্জন করা না গেলেও সফলতা ছিল উল্লেখ করার মতো। এমডিজির মতো টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নেও বাংলাদেশ সাফল্যের পরিচয় দেবে, এটাই সবার প্রত্যাশা। বস্তুত এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে ৮০টি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। ১৭টি লক্ষ্যের ১০টিতেই করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সাম্প্রতিক অগ্রগতি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্যান্য চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি কোভিড-১৯ টেকসই উন্নয়ন ধারণার মূল ভিত্তিগুলোর জন্য একটি বড় আঘাত। বিশেষত অন্তর্ভুক্তি ও কাউকে পেছনে ফেলে নয়-এ ধারণার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ পরিলক্ষিত হয়েছে। কোভিডে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে। সৌভাগ্যক্রমে অন্যান্য দেশের তুলনায় প্রাণহানি কম হলেও আমাদের দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল উল্লেখ করার মতো। মহামারি বিভিন্ন খাতে যে ক্ষত সৃষ্টি করেছে, সেসব ধাক্কা সামলিয়ে আগামী ৮ বছরে এসডিজির বাস্তবায়ন কতটা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেওয়া যাবে, তা নিয়ে রয়েছে নানা সংশয়। দুঃখজনক হলো, করোনা-পরবর্তী পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় অন্যতম বাধা হিসাবে দেখা দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। দারিদ্র্য নিরসন, জেন্ডার সমতা অর্জন, গ্রামীণ রূপান্তর প্রক্রিয়া শক্তিশালীকরণ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সম্প্রসারণ এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন প্রশংসনীয়। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার পদক্ষেপ নিতে হবে।

জানা যায়, ১৭টি অভীষ্টের (লক্ষ্য) মধ্যে দারিদ্র্যে বিলোপ ও ক্ষুধামুক্তির ক্ষেত্রে রয়েছে ছয় ধরনের চ্যালেঞ্জ; সুস্বাস্থ্য ও সামাজিক কল্যাণে তিন ধরনের এবং গুণগত শিক্ষার ক্ষেত্রে রয়েছে পাঁচ ধরনের চ্যালেঞ্জ। এছাড়া সাশ্রয়ী-নির্ভরযোগ্য-টেকসই ও আধুনিক জ্বালানির ক্ষেত্রে রয়েছে পাঁচ ধরনের চ্যালেঞ্জ; শোভন কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে রয়েছে পাঁচ ধরনের চ্যালেঞ্জ। এছাড়া শিল্প-উদ্ভাবন ও অবকাঠামোর ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ রয়েছে চার ধরনের। অসমতা হ্রাসের ক্ষেত্রে দুই, টেকসই নগর ও জনপদে ছয় এবং পরিমিত ভোগ ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে রয়েছে তিন ধরনের চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও জলবায়ু কার্যক্রমের ক্ষেত্রে ছয়, জলজ জীবনের ক্ষেত্রে ছয়, স্থলজ জীবনে দুই, শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পাঁচ এবং অভীষ্ট অর্জনে অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে রয়েছে পাঁচ ধরনের চ্যালেঞ্জ।

২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ। কিন্তু করোনার কারণে কমে গিয়ে প্রকৃত অর্জন হয়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। করোনার কারণে রপ্তানি, বিনিয়োগে হ্রাস পেয়েছে; কর আদায় হয়েছে কম; এছাড়া স্বল্পমেয়াদে বেকারত্ব বেড়েছে, দারিদ্র্য ও বৈষম্যও বেড়েছে। তবে করোনার স্বল্পমেয়াদি প্রভাব মোকাবিলায় সরকারের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ ছিল প্রশংসনীয়। উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমলেও ২০২০-২১ অর্থবছরে বেড়েছে; ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি আরও বেড়েছে। এসডিজি বাস্তবায়নে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা দরকার। রপ্তানি যাতে অব্যাহত বৃদ্ধি পায় তার পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে রেমিট্যান্স প্রবাহ ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ খাত চাঙা করার জন্যও নিতে হবে পদক্ষেপ। শিক্ষার মান বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে বিভিন্ন ধরনের উৎপাদন খাতে দক্ষ জনবল সংকট সৃষ্টি হতে পারে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম