প্রকল্পে ব্যবহৃত গাড়ি নিয়ে প্রশ্ন, সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনের বিকল্প নেই
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিগত ৪ অর্থবছরে ১ হাজার ২২৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে প্রকল্পের অধিকাংশ গাড়ি সরকারি পরিবহণ পুলে জমা পড়েনি।
সংশ্লিষ্টদের মতে, কমপক্ষে ২০ হাজার গাড়ি যে যার মতো অবৈধভাবে ব্যবহার করছেন। শনিবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, এসব গাড়ির পেছনে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থে জ্বালানি ও চালকসহ মেইনটেন্যান্স ব্যয় বাবদ যাচ্ছে কয়েকশ কোটি টাকা। পাশাপাশি ব্যবহৃত এসব গাড়ি জমা না হওয়ায় অর্থ সংকটের মধ্যেও নতুন গাড়ি কিনতে হচ্ছে।
জানা যায়, বিষয়টি আলোচনায় আসে চলতি অর্থবছরে ডিসি ও ইউএনওদের জন্য ২৬১টি জিপ গাড়ি কেনাকে কেন্দ্র করে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ মূল্যায়ন বিভাগের তথ্যমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৯৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও গাড়ি জমা পড়েছে ৪১টি। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৫০টি উন্নয়ন প্রকল্প শেষে জমা পড়েছে মাত্র ৩৩টি গাড়ি। গেল অর্থবছরে ৩৩৭টি উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হলেও কোনো গাড়ি এখনো জমাই পড়েনি। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে গাড়ি জমা পড়েছিল ২৯টি।
সরকারি নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে এমন অনিয়ম স্পষ্টতই প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত কৃচ্ছ্রসাধনের পরিপন্থি। জানা গেছে, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে প্রকল্পের গাড়ি প্রসঙ্গে সম্প্রতি অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অনুশাসনে তিনি বলেছেন, ‘সমাপ্ত প্রকল্পের ব্যবহার করা গাড়িগুলো কোথায় আছে এবং সেগুলো কী কী কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে জানতে চাই।’ তার এই অনুশাসন যথার্থ। পুরোনো গাড়িগুলো যথাসময়ে পরিবহণ পুলে জমা হলে ডলার সংকটের এ সময়ে নতুন গাড়ি কেনার জন্য বিপুল অর্থ খরচ করতে হতো না। যেমন, সম্প্রতি ডিসি ও ইউএনওদের জন্য ২৬১টি গাড়ি কেনার প্রয়োজন পড়েছে। এক্ষেত্রে যথাসময়ে পুলে ফেরত এলে পুরোনো গাড়িগুলোই সংস্কার করে ব্যবহার করা সম্ভব হতো। এতে গাড়ি কেনা বাবদ সাশ্রয় হতো ৩৮০ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি গাড়ি ব্যবহার হয়। প্রকল্প শেষ হওয়ার পর পিডিকে অন্যত্র বদলি করার আগে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের গাড়ি জমা দেওয়া এবং পরিবহণ পুলের ছাড়পত্র দাখিল বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। এছাড়া সব প্রকল্পের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত গাড়ির হিসাবও নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় সমস্যার সমাধান হবে না। এমন অনিয়ম রোধে সরকারের সব বিভাগ নির্দেশনা প্রতিপালনে আরও আন্তরিক হবে, এটাই প্রত্যাশা।