বিমানবন্দরে ডলার বেচাকেনা
স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে বড় ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সোমবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, এসব অনিয়ম হচ্ছে বিমানবন্দরের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত বেশ কয়েকটি ব্যাংকের শাখা, বুথ ও মানি চেঞ্জারস প্রতিষ্ঠানে। তারা ব্যাংকিং নিয়মকানুন মেনে ডলার ক্রয়বিক্রয় করছে না।
কিছু ব্যাংকার ও অসাধু চক্র লাভবান হওয়ার জন্য বেআইনিভাবে এ কাজ করছে। ফলে প্রবাসী বা বিদেশিদের বিক্রি করা ডলার দেশের ব্যাংকিং চ্যানেলে আসছে না। সাধারণত বিমানবন্দরে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব অর্থে বৈদেশিক মুদ্রা কেনার কথা। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তারা নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকের টাকা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা না কিনে তাদের ব্যক্তিগত অর্থ দিয়ে তা কিনছেন। পরে এসব ডলার বিদেশে যাওয়া ব্যক্তিদের কাছে চড়া দামে বিক্রি কিংবা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে নিজেরা লাভবান হচ্ছেন।
জানা যায়, এ খাত থেকে সিন্ডিকেটের প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে ৩ কোটি টাকা আয় হয়ে থাকে। এ কারণে মাসে ৫০ কোটি টাকার বেশি অর্থ সরকারি কোষাগারে যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, এ চক্রের কারণে প্রবাসীদের কাছ থেকেও ক্রয়কৃত ডলার বা বিদেশি মুদ্রা সরকারের খাতায় যোগ হচ্ছে না।
অভিযোগ উঠেছে, কিছু অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তা প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার বা বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় করলেও তাদের যথাযথ বিল-ভাউচার দেওয়া হয় না। যেখানে প্রতিটি ব্যাংক, বুথ ও মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিদিন ২শ থেকে ৩শ প্রবাসীর কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় করে থাকে, সেখানে যথাযথ বিল-ভাউচার দেওয়া হয় মাত্র ২৫ থেকে ৫০ জনকে। বাকিদের জাল বিল-ভাউচার দেওয়া হয়, অনেককে আবার দেওয়াও হয় না। বিমানবন্দরের বাইরেও সক্রিয় রয়েছে এ চক্র। সেখানেও তারা অবৈধ পথে যাত্রীদের কাছ থেকে ডলার বেচাকেনা করে সরকারকে রাজস্ববঞ্চিত করছে।
বৈদেশিক অর্থের প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা, রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং ব্যাংক ও আর্থিক খাতকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু বিমানবন্দরের এ রকম অসাধু চক্রের কারণে এসব উদ্যোগ নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আমরা আশা করব, এসব অনিয়মকে গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের চিহ্নিত করে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। অন্যথায় ডলার আসার স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হবে আর সরকার বঞ্চিত হবে প্রাপ্য রাজস্ব থেকে।