Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

রাজনৈতিক সংকট

আক্রমণাত্মক বক্তব্য পরিহার করা উচিত

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাজনৈতিক সংকট

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস বাকি থাকলেও কোন সরকারের অধীনে ভোট হবে, এর সুরাহা এখনো হয়নি। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে সৃষ্ট সংকট সমাধানে বড় দুই দলকে সংলাপে বসার তাগিদ দিয়ে এলেও কার্যত কোনো ফল মিলছে না। দেশের বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি শর্তের যে বেড়াজাল টেনে রেখেছে, তাতে সংলাপ কতটা ফলপ্রসূ হবে, এ প্রশ্ন থেকেই যায়। রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজসহ দেশের বিশিষ্টজনরা মনে করছেন, চলমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে অর্থবহ সংলাপই শেষ ভরসা। তাদের মতে, সব দলের অংশগ্রহণে আগামী দিনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে আলোচনার টেবিলে বসা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। আর এ উদ্যোগ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের তরফ থেকেই নিতে হবে। তবে ‘শর্ত’ জুড়ে দিলে এ সংলাপ দিনশেষে অর্থহীন হবে। এতে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল ও সংঘাতময় হয়ে ওঠার আশঙ্কা থাকবে।

দেখা যাচ্ছে, দল দুটির নেতারা যেভাবে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন, তাতে সংকট সমাধানের আশার আলো ক্রমেই ক্ষীণ হচ্ছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দল দুটির ‘পালটাপালটি’ কর্মসূচি ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। রাজধানীর নয়াপল্টনে সোমবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘যুব সমাবেশে’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অবৈধ সরকারের সঙ্গে সংলাপ নয়, চূড়ান্ত আন্দোলনের মাধ্যমেই তাদের পতন ঘটানো হবে। একই দিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে যুবলীগ আয়োজিত যুব সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি সরকার পতনের স্বপ্ন দেখলে তাদের পরিণতি শাপলা চত্বরের থেকেও করুণ হবে।

এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষের মনে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে। কারণ, রাজনৈতিক সংঘাতে সাধারণত রাজনীতিকদের যতটা মাশুল গুনতে হয়, জনগণকে গুনতে হয় এর চেয়ে বেশি। এদিকে দেশে অবাধ, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ দিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের একাধিক প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করেছে। তাদের এ প্রচেষ্টা কতটা কাজে দেবে, তা সময়ই বলে দেবে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোকে স্ব-উদ্যোগে সহিষ্ণুতার রাজনীতির চর্চা করতে হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বড় দল দুটি যে অবস্থান নিয়েছে, তা পরিস্থিতিকে আরও সংঘাতময় করবে। অতীতে বিভিন্ন কারণে এবং ক্ষমতার পালাবদলের প্রেক্ষাপটে দেশে সহিংস রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। মাসের পর মাস হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালনকালে সহিংসতায় বহু প্রাণহানি হয়েছে। সে সময় দেশজুড়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে যে ব্যাপক ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় সম্পদহানি হয়েছিল, এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল অর্থনীতিতে। মনে রাখতে হবে, দেশের অর্থনীতি বর্তমানে নানা সংকটে রয়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতা এ সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। রাজনৈতিক সংকট দূর করার জন্য আগামী নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হওয়া প্রয়োজন। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, এরও অবসান হওয়া দরকার। এজন্য দেশ ও জনগণের স্বার্থে সরকার ও বিরোধী দুপক্ষই অনড় অবস্থান থেকে সরে এসে সংলাপের টেবিলে বসবে-এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম