বাজারের স্বার্থান্বেষী মহল: সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে পুলিশকে সক্রিয় হতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর না হওয়ার কারণ নির্ধারণে বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সভায় ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে বাজারে সংকট তৈরি হয়। তিরি আরও বলেছেন, বাজারের যে কোনো সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার সক্ষমতা ডিএমপির রয়েছে। মূলত বাজার সিন্ডিকেটকেই যে তিনি স্বার্থান্বেষী মহল বলেছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রশ্ন হলো, এ সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার সক্ষমতা পুলিশের থাকলে তার প্রয়োগ কোথায়? দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে রয়েছে দেশের বাজারব্যবস্থা। বলা যায়, কোনো নিত্যপণ্যের ব্যবসাই এখন আর সিন্ডিকেটমুক্ত নেই। এমনকি সরকার ডিম ও পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে তা কার্যকর হয়নি। বরং উত্তরোত্তর বাড়ছে সব পণ্যের দাম। পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকায় উঠেছে।
আমাদের কথা হলো, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানি করা পণ্যের দাম কিছুটা বাড়তেই পারে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কোনো পণ্যের আমদানিতে যতটা না দাম বাড়ছে, অসৎ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে অসৎ ব্যবসায়ীরা মওকা পেয়ে যাচ্ছে। এ প্রবণতা কোনোভাবেই চলতে দেওয়া যায় না। ডিএমপি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে, এটি স্বস্তিদায়ক। এখন দেখার বিষয় পুলিশ বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়। মনে রাখা দরকার, অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা অপরাধী, তাদের শক্ত হাতে দমন করা জরুরি। অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই দিন দিন তাদের লোভ বাড়ছে, তারা হয়ে উঠছে বেপরোয়া।
বাজার তদারকির কথা শোনা গেলেও বাস্তবে এ ধরনের তৎপরতা কোনো বাজারেই দৃশ্যমান নয়। সিন্ডিকেট চিহ্নিত করতে প্রয়োজনে বাজারে গোয়েন্দা তৎপরতা চালাতে হবে। অসৎ ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এ ধরনের কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হলে অতি মুনাফাখোরদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হতে বাধ্য। এছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের আরেকটি ব্যবস্থা হতে পারে বাজারে পর্যাপ্ত পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা। তবে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, পর্যাপ্ত পণ্য থাকার পরও দ্রব্যমূল্য কমছে না। এতে বোঝা যায় সিন্ডিকেট কতটা শক্তিশালী। সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম তথা টিসিবিকে সক্রিয় করা প্রয়োজন। তবে সিন্ডিকেটকারীদের অবশ্যই শক্ত হাতে দমন করতে হবে।