Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তায় জোর দিতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তায় জোর দিতে হবে

ঢাকার আকাশপথে যাত্রার ক্ষেত্রে সম্ভাবনার নবদিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১২টায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অপরূপ নির্মাণশৈলীর দৃষ্টিনন্দন তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনের পর বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট তৃতীয় টার্মিনাল ব্যবহার করে ঢাকা ত্যাগ করে। সেই ফ্লাইটের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং করে রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ বিমান। অবশ্য তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের কাজ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে করবে একটি জাপানি কোম্পানি।

এ টার্মিনালটি একটি মাল্টিমোডাল পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে যাত্রীরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ ও প্রস্থান করতে সক্ষম হয়। এটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভূগর্ভস্থ রেলপথ এবং একটি ভূগর্ভস্থ টানেলের মাধ্যমে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এছাড়া আশকোনা হজক্যাম্প থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলের মাধ্যমে হজযাত্রীরা তৃতীয় টার্মিনালে যেতে পারবেন। পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলোসহ থার্ড টার্মিনালের ফ্লোর ও সিলিংয়ে নজরকাড়া প্যাটার্নের বৈশিষ্ট্যগুলো খুবই পরিশীলিত। বেবিচকের তথ্যানুযায়ী, থার্ড টার্মিনালে থাকবে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ, উড়োজাহাজ রাখার জন্য ৩৬টি পার্কিং বে, বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেকইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেকইন কাউন্টার। এছাড়া ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ থাকবে ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার, আগমনের ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেকইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট ও ১৯টি চেকইন অ্যারাইভাল কাউন্টার। এর বাইরে টার্মিনালে ১৬টি আগমনী ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে। ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে থাকছে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন। এছাড়া টার্মিনালের চারদিকে থাকছে নিশ্ছিদ্র বাউন্ডারি ওয়াল, সিকিউরিটি গেট, গার্ড রুম ও ওয়াচ টাওয়ার। এর বাইরে ল্যান্ড সাইড, সার্ভিস রোডসহ এলিভেটেড রোড, ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম, সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, ইনটেক পাওয়ার প্ল্যান্ট ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম, কার্গো কমপ্লেক্সের জন্য সিকিউরিটি ও টার্মিনাল ইকুইপমেন্ট, এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম, হাইড্রেন্ট ফুয়েল সিস্টেমসহ আনুষঙ্গিক সব সুবিধা থাকছে। এছাড়া অন্যতম আকর্ষণ হিসাবে রয়েছে ফানেল টানেল। অর্থাৎ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিমানবন্দরের সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে থার্ড টার্মিনালে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন টার্মিনালটি বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা এবং যাত্রী পরিষেবা দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি পালটে দেবে। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে নির্মিত টার্মিনালটির ব্যয় প্রথমে ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা ধরা হলেও পরে একাধিক দফায় বেড়ে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। শেষ হয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ। আশা করা হচ্ছে, আগামী বছর টার্মিনালটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে। সব মিলে বলা যেতেই পারে, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে একটি এভিয়েশন হাব হিসাবে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তা বাস্তবায়নের প্রথম মাইলফলক অপরূপ নির্মাণশৈলীর সর্বাধুনিক এই তৃতীয় টার্মিনাল। তবে এ প্রশান্তি ধরে রাখতে যথাযথ পরিচর্যার পাশাপাশি যাত্রীসেবার মান বজায় রাখা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জোর দেওয়ার বিকল্প নেই। অতীতে এ দুটি বিষয়ে যেসব সমালোচনার জন্ম হয়েছিল, তা থেকে উত্তরণে সব টার্মিনালের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট হবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম