বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা: আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য থাকতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অর্থবছরের শুরুতে বাজেট বাস্তবায়নে প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। আর এ পরিকল্পনা প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে এক মাসের মধ্যে। এ নির্দেশ প্রদানের কারণ হলো, মন্ত্রণালয়গুলো সুষ্ঠুভাবে বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারছে না। অর্থবছরের শুরুতে অর্থ ব্যয় হয় ধীরগতিতে; কিন্তু অর্থবছরের শেষদিকে ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এর ফলে সরকারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হচ্ছে, যা মোকাবিলা করতে গিয়ে সরকারকে অপরিকল্পিত ঋণ গ্রহণ করতে হচ্ছে। অর্থ বিভাগ মনে করে, বাজেট নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নের জন্য আগাম পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। এটি করতে পারলে অপরিকল্পিত ঋণ গ্রহণ এড়ানো সম্ভব হবে।
আমাদের অর্থনীতির ব্যাপ্তি বেড়েছে। স্বভাবতই বাজেটের আকার বাড়ছে। কিন্তু আমাদের বাজেট বাস্তবায়নের যে সক্ষমতা, তার সঙ্গে এটি মানানসই নয়। কারণ, প্রতিবছরই দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ে বাজেট বাস্তবায়িত হয় না। প্রকল্প বাস্তবায়নের হারও কম। বিপুল অঙ্কের বাজেটের কারণে আয়ের লক্ষ্যমাত্রাও বিপুল। কিন্তু সক্ষমতা না থাকায় সেই আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না। আমাদের বাজেট বাস্তবায়নের প্রতিবন্ধকতাগুলো হলো-সক্ষম জনশক্তির অভাব, দুর্নীতি এবং দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থা। সক্ষম জনশক্তির অভাবে আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই নানা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি। আমাদের উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে। তাই বাজেট বাস্তবায়নে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়াই যথেষ্ট নয়, নিতে হবে কর্মদক্ষতা বাড়ানোর পদক্ষেপ। দুর্নীতি রোধে ছোট-বড় সব প্রকল্পে কঠোর মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। সব প্রকল্পের একটি মনিটরিং কমিটি থাকতে হবে। তাদের দায়িত্ব হবে প্রকল্পের যেটুকু কাজ হয়েছে এবং এর জন্য যে টাকা ব্যয় হয়েছে, তা সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা, তা মনিটর করা। এর ফলে নিশ্চিত হবে সরকারি ব্যয়ের গুণগত মান। মন্ত্রণালয়গুলোর পরিকল্পনায় এ বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে, এটাই কাম্য।