তলানিতে রেলের যাত্রীসেবা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![তলানিতে রেলের যাত্রীসেবা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2023/09/24/image-721431-1695511169.jpg)
দেশের জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ ট্রেনযাত্রী। পরিসংখ্যান বলছে, বছরে ১০ কোটিরও বেশি মানুষ রেলপথে যাতায়াত করেন। এ কারণে বছরে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে রেলপথে যাত্রীসেবার মান বাড়াতে সরকার ট্রেনের সংখ্যা বাড়ায়।
পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্য ভ্রমণে ট্রেনের কামরা, আসন, কেবিন, টয়লেট, দরজা-জানালার সংস্কারসহ নিরাপত্তামূলক সমুদয় কাজ করানোর জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বাবদই বছরে ৭ কোটি টাকার বেশি বিল করা হয়।
কিন্তু যাত্রীদের দুর্ভাগ্য, তাদের নামে টাকা বরাদ্দ হলেও সেবা মেলে না। শনিবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, কয়েকটি বেসরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে অনেকটা ভাঁওতাবাজি করেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিল তুলে নেয়। কাগজে-কলমে এ কাজে ৫০০ দিনমজুর দেখানো হলেও বাস্তবে ৪০-৫০ জন নেশাখোর টাইপের যুবককে দিয়ে দায়সারা পরিচ্ছন্নতার মহড়া দেওয়া হয়। বর্তমানে ৪৯৩টি স্টেশন এবং ৩৬৭টি যাত্রীবাহী ট্রেন সচল রয়েছে। আন্তঃনগর ট্রেনের এসি কেবিন ও কোচগুলো কিছুটা পরিষ্কার থাকলেও বাকি কোচগুলো থাকে জঞ্জালে পূর্ণ।
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজরে আনলে কেউ যাত্রীদের ওপর দায় চাপিয়েছেন, কেউ আবার এর দায় চাপিয়ে দিয়েছেন অন্য দপ্তরের ওপর। সমস্যার সমাধান না করে একে অন্যের ওপর দায় চাপানোর চর্চা নতুন নয়। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এতে সমস্যার সমাধান হয় না, বরং বাড়ে। এর আগেও অনিয়ম-দুর্নীতিসহ বাংলাদেশ রেলওয়ের নানা সমস্যা চিহ্নিত হলেও তা সমাধানে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। দেশে ভয়াবহ যানজট, বেহাল সড়ক ব্যবস্থাপনার প্রেক্ষাপটে রেলের লাভজনক হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সংস্থাটি লোকসানেই রয়েছে। এ কথা ঠিক, গত কয়েক বছরে রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দৃশ্যমান বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি, উলটো এ সংস্থার লোকসান দিনদিন বাড়ছে। অথচ সদিচ্ছা থাকলে বর্তমান অবকাঠামো ও ইঞ্জিন-কোচ দিয়েই ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ঘটিয়ে এ সংস্থার আয় কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব। যেহেতু দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে রেলের রুগ্ণ দশা কাটছে না, সেহেতু এ সংস্থার সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক হতে হবে। রেলের সার্বিক উন্নয়নে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কঠোর হবে, এটাই প্রত্যাশা।