পুরাতন কাপড়েও সিন্ডিকেট, সরকারের দৃষ্টি প্রয়োজন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পুরাতন কাপড়ের ‘মনোপলি’ ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে নানা কৌশলে আমদানি বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে এ খাতের সিন্ডিকেট, যাদের কাছে মজুত আছে প্রচুর পুরাতন কাপড়।
অভিযোগ উঠেছে, তারা পুরাতন কাপড়ের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অতিমুনাফা করার উদ্দেশ্যে আমদানি বিলম্বিত করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে। উল্লেখ্য, প্রতিবছর শীত মৌসুম সামনে রেখে অক্টোবরের মধ্যে পুরাতন কাপড় আমদানি করা হয়। কিন্তু এবার আমদানিকারকদের পূর্বানুমতি প্রদানের শিডিউল এক মাসের মধ্যে তিন দফা সংশোধন করে চতুর্থ দফা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রক দপ্তর।
এতে দেখা যায়, কাপড় আমদানির পূর্বানুমতিপত্র জারি বা লাইসেন্স ইস্যুর তারিখ প্রায় দুই মাস পিছিয়ে ৩০ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময়সীমা অনুযায়ী অনুমতিপত্র নিয়ে এলসি খুললে কাপড় বন্দরে পৌঁছাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নাগাদ। এতে শীত মৌসুম পেরিয়ে যাবে।
ফলে কাপড় বিক্রির আর সুযোগ থাকবে না। বিষয়টি উদ্বেগজনক। কারণ এসব শীতের কাপড়ের ক্রেতা মূলত নিুবিত্ত। সিন্ডিকেটের কারণে তাদের উচ্চমূল্যে পুরাতন কাপড় কিনতে হবে, অনেকের পক্ষেই যা সম্ভব হবে না। কাজেই অক্টোবরের মধ্যেই পুরাতন কাপড় আমদানি নিশ্চিত করতে হবে। সেক্ষেত্রে এ সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া জরুরি।
সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের বাজারব্যবস্থা। বলা যায়, কোনো নিত্যপণ্যের ব্যবসাই এখন আর সিন্ডিকেটমুক্ত নেই। দেখা যাচ্ছে, গরিবের পরিধেয় পুরাতন কাপড়ের ব্যবসাও এখন সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। অভিযোগ আছে, বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লেই ব্যবসায়ী নেতারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে বলেন, চাহিদার অতিরিক্ত পণ্যের মজুত থাকায় আমদানির প্রয়োজন নেই।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তখন আশ্বাস দেওয়া হয়-কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। কিন্তু ভোক্তারা বাজারে গিয়ে দেখেন পণ্যের সংকট, ফলে উচ্চমূল্য। এভাবেই বিভিন্ন সিন্ডিকেট সাধারণ মানুষের পকেট কেটে হাতিয়ে নিচ্ছে শত কোটি টাকা। দীর্ঘদিন ধরে এ কারসাজি চলে এলেও তা বন্ধে নেওয়া হচ্ছে না কার্যকর পদক্ষেপ।
অভিযোগ আছে, এসব সিন্ডিকেটের বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন দলের সুবিধাভোগী। এ অবস্থায় সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সিন্ডিকেট থাকলে তা ভাঙা যাবে না, এটা কোনো কথা নয়। কাজেই তিনি বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেবেন বলেই আমাদের ধারণা।