Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

শিশুখাদ্যের আকাশছোঁয়া দাম

পুষ্টির জোগান ব্যাহত হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শিশুখাদ্যের আকাশছোঁয়া দাম

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় সব শ্রেণির ক্রেতার নাভিশ্বাস ওঠার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও এসব দেখার যেন কেউ নেই। অতীতে আমরা লক্ষ করেছি, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার লোভে শিশুখাদ্যের বাজার যখন-তখন অস্থির করে তুলেছে।

দুঃখজনক হলো, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান পরিচালনার নজির নেই। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম বাড়ায় বর্তমানে সব শ্রেণির ক্রেতাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এক বছরের ব্যবধানে ৩৫০-৪০০ গ্রাম ওজনের প্যাকেট ও কৌটাজাত শিশুখাদ্যের মূল্য সর্বোচ্চ ২১০ টাকা বেড়েছে। কেজিপ্রতি গুঁড়াদুধের দাম বেড়েছে ১৫০ টাকা।

বস্তুত শিশুখাদ্যের দাম আকাশছোঁয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এতে সন্তানের খাবারের চাহিদা মেটাতে বাবা-মার দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাবার কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে, যা বলাই বাহুল্য। পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর মাতৃদুগ্ধের পাশাপাশি বিভিন্ন রকম পুষ্টিকর খাবারও খাওয়াতে হয়।

বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ায় মধ্যবিত্ত ও নিুবিত্ত বেশিরভাগ পরিবার সন্তানদের পুষ্টিকর খাবারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। জানা যায়, বিভিন্ন রকম শিশুখাদ্য আমদানি করে সরবরাহ করা হয়। ডলার ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন ও পরিবহণ খরচ বাড়ায় শিশুখাদ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে। তবে যে হারে মূল্যবৃদ্ধির কথা তা হয়নি, কারসাজি করে বেশি দাম বাড়ানো হয়েছে। বস্তুত আমদানিকারকরা বিভিন্ন অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দেন। ফলে সব শ্রেণির ক্রেতার ভোগান্তি বেড়েছে।

লক্ষ করা যায়, অসাধু ব্যবসায়ীরা অযৌক্তিকভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। শিশুখাদ্যের বাজার হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা অস্বাভাবিকভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাকে হয়রানি করছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা দরকার। নিত্যপণ্যের অব্যাহত দাম বৃদ্ধিতে খেটে খাওয়া মানুষের উদ্বিগ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক।

ক্রয়ক্ষমতা কম থাকায় বর্তমানে নিুআয়ের শ্রমজীবীরা কতটা অসহায় বোধ করছেন তা সহজেই অনুমেয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে সরকারি সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কথাবার্তা উঠলেই পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা পরস্পরকে দোষারোপ করে থাকে।

এভাবে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করলেও এটি মূলত ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণেরই চেষ্টা, এতে কোনো সন্দেহ নেই। নানা অপকৌশলে ভোক্তাদের ঠকানো ছাড়াও কারসাজি ও যোগসাজশের মাধ্যমে যখন-তখন নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া অনৈতিক তো বটেই, সেই সঙ্গে অপরাধও।

অতীতে বহুবার সময় ও সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নিত্যপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। কারসাজি করে কেউ বাজার অস্থির করার চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে শর্ষের ভেতরের ভূত তাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে না।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম