রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ গাছ
নিয়মিত পরীক্ষা করা জরুরি
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকলে বৃক্ষও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে দুটি গাড়ি ও যাত্রীবাহী রিকশার ওপর বড় আকৃতির একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েকজন। গাছটি কখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছিল, কর্তৃপক্ষের সে খবর জানা থাকলে এ দুর্ঘটনা ঘটত না। রাজধানীতে এমন দুর্ঘটনা এর আগেও কয়েকবার ঘটেছে। এরপরও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।
২০১৬ সালের মার্চে রাজধানীর ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কে একটি বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছের ডাল ভেঙে প্রাণ হারান প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা খালিদ মাহমুদ মিঠু। ওই সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ওই চিত্রশিল্পী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা যে গাছটির নিচে চাপা পড়েন, সেই গাছটি আগের দিন সন্ধ্যার ঝড়েই হেলে পড়েছিল। এর পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও কেউ হেলে পড়া গাছটির ডালপালা কাটেনি কিংবা গাছটি সড়কের ওপর থেকে সরানোর উদ্যোগ নেয়নি। তখন অনেকেই বলেছিলেন, ঝড়ের পরপর হেলে পড়া গাছটি সড়কের ওপর থেকে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হলে সম্ভবত ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
নানা কারণে রাজধানীর সড়ক ও ফুটপাতের পাশের গাছের শিকড় গভীরে যেতে পারছে না। ফলে গাছগুলোর মাটি কামড়ে থাকার শক্তি তুলনামূলক কম। নানা রকম নির্মাণকাজ-ফুটপাত সংস্কার কিংবা খোঁড়াখুঁড়ির কারণেও গাছগুলোর শিকড় আলগা হয়ে থাকে। তাই সামান্য ঝড়ো বাতাসেও উপড়ে পড়ে এসব গাছ। কাজেই এমনভাবে রাস্তা ও ফুটপাতের সংস্কারকাজ করতে হবে যাতে গাছগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় টিকে থাকতে পারে।
গাছ লাগানোর পাশাপাশি সঠিকভাবে এর পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ করার পদক্ষেপও নিতে হয়। সড়কের আশপাশে বৃক্ষ, স্থাপনা বা ঝুঁকিপূর্ণ কিছু আছে কিনা, তা চিহ্নিত করার কথা সিটি করপোরেশনের। কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব যে সঠিকভাবে পালন করছে না, একের পর এক গাছ বা গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় তা স্পষ্ট হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের উচিত রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় বছরে অন্তত একবার ঝুঁকিপূর্ণ গাছ চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। তবে রাজধানীর বিশাল এলাকার প্রতিটি বড় গাছ ঝুঁকিপূর্ণ কিনা তা যাচাই করা এককভাবে সিটি করপোরেশনের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই এ কাজে জনগণকে কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায়, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। রাজধানীর গাছগুলোর ঝুঁকি নিয়মিত পরীক্ষা করা হবে, এটাই কাম্য।