Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

নগরীতে জনভোগান্তি, রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে পরিবর্তন আনা জরুরি

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নগরীতে জনভোগান্তি, রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে পরিবর্তন আনা জরুরি

দীর্ঘদিন পর রাজধানীতে বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মসূচিকেন্দ্রিক সহাবস্থান দেখেছে দেশবাসী। যদিও একই দিনে বিরোধীদের সমাবেশের ঘোষণায় ক্ষমতাসীন দলের পালটা কর্মসূচির চর্চাও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপিকে দীর্ঘদিন পর পূর্ণ শক্তি নিয়ে রাজপথে নামতে দেখা যাচ্ছে। একইভাবে আওয়ামী লীগও বড় জনসমাবেশ ঘটিয়ে শক্তি দেখাতে চাচ্ছে। সম্প্রতি সরকার পতন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগও পালটা কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।

দুই পক্ষের কর্মসূচির প্রভাব পড়ে নগরীর ব্যস্ত সড়কগুলোয়। স্বাভাবিক দিনগুলোতেই যানজটের কারণে নগরবাসীকে চলাচলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। তার ওপর সড়কনির্ভর রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার ফলে সারাদিনের জন্য নগরী কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এখন প্রায়ই এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে রাজধানীতে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, সভা-সমাবেশ করা রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে জনগণের কথাও তাদের মাথায় রাখতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর বর্তমান কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে, রাজধানীর রাজপথগুলোয় প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, জনদুর্ভোগ তৈরি হলে তা রাজনৈতিক দলগুলোর জনসমর্থনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা দেখেছি বিএনপির পদযাত্রা এবং আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের কারণে রাজধানীবাসী কতটা দুর্ভোগের শিকার হয়েছিল। অতি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ পড়েছিল চরম বিপাকে। অফিসগামী কিংবা দূরযাত্রার উদ্দেশে যারা ঘর থেকে বের হয়েছিলেন, তারা নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি। পরিবহণ সংকটের কারণে অনেককে গুনতে হয়েছে বাড়তি ভাড়া, অনেকে আবার হেঁটেই গন্তব্যে গেছেন। তীব্র যানজটে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীদের দীর্ঘসময় রাস্তায় আটকে থাকতে হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পালটাপালটি এসব কর্মসূচি সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্কেরও জন্ম দিচ্ছে। দুই বড় দলের কাছাকাছি কর্মসূচির ঘোষণায় অতীতে যে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, সেই স্মৃতি থেকে এ আশঙ্কা অমূলক নয়। আবার নিরাপত্তাজনিত কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর তৎপরতাও কখনো কখনো ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নিরাপত্তার কারণে রাজধানীর প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে পুলিশের তল্লাশি ও ধরপাকড়ের ফলে সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন। মনে রাখতে হবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শুধু নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে। সেক্ষেত্রে কোনো অবস্থাতেই জনগণকে হয়রানি করা যাবে না।

কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলকেই জনগণের কথা মাথায় রেখে সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। নগরজীবনের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড যাতে ব্যাহত না হয়, সেদিকে রাজনৈতিক দলগুলোকে খেয়াল রাখতে হবে। সভা-সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি যেন শান্তিপূর্ণ হয়, সেটা মূলত তাদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে। দেখা যাচ্ছে, রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলো পালিত হচ্ছে কর্মদিবসে ও সড়কে। এর ফলে নগরবাসী যে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, তা এড়াতে বড় ধরনের কর্মসূচিগুলো ছুটির দিনে এবং খোলা প্রান্তরে করা যায় কিনা, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারেন তারা। মনে রাখতে হবে, দেশের রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের স্বার্থরক্ষা করা। কাজেই কর্মসূচি ঘোষণা এবং তা পালনের ক্ষেত্রে জনগণের কথা মাথায় রাখা সব দলের জন্যই বাঞ্ছনীয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম