সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্প প্রণয়ন
সংকটের সময়ে এ অনিয়ম বরদাশত করা যায় না
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতীকী ছবি
দেশে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির বিষয়টি বহুল আলোচিত। এ প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের বাড়তি নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে নানা রকম উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে সন্তোষজনক অগ্রগতি লক্ষ করা যায় না। বিষয়টি দুঃখজনক। রোববার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্পে চার বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। সেই সঙ্গে বর্ধিত মেয়াদেও প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া এক বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এতেও কাজ শেষ না হওয়ায় প্রথম সংশোধনীতে তিন বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতি, অক্টোবর ২০১৬-এর অনুচ্ছেদ ৪ দশমিক ১ অনুযায়ী, ২৫ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে প্রাক্কলিত ব্যয় সম্পন্ন বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণের পূর্বে আবশ্যিকভাবে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করতে হয়। আলোচিত প্রকল্পে তা করা হয়নি। সেই সঙ্গে সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন নির্দেশিকা-জুন, ২০২২ অনুযায়ী চলমান প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষাও সম্পন্ন করা হয়নি। যথাযথ সমীক্ষা ছাড়া আলোচিত প্রকল্পটি কেন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। অতীতে বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিভিন্ন বিষয়ে অদক্ষতার অভিযোগ উঠেছে; অতীতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা ধরনের কারসাজির অভিযোগও উঠেছে। আলোচিত প্রকল্পের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কারসাজির চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার।
জানা যায়, ভবন নির্মাণের আগেই আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি ক্রয় করায় সেগুলো সংরক্ষণে সমস্যা তৈরি হয়েছে। আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের তথ্য থেকেই সংশ্লিষ্টদের অদূরদর্শিতা স্পষ্ট। ইতোমধ্যে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় আলোচিত প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে শেষ করা সম্ভব হবে কিনা এ নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে শেষ করার পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা মনে করি, সঠিক তদারকি অব্যাহত না থাকলে এ প্রকল্পের নির্মাণকাজের গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। এসব ঝুঁকি এড়াতে প্রকল্পটির নিবিড় তদারকি অব্যাহত রাখা দরকার। যে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদ্যমান সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করে এমন কৌশল অবলম্বন করতে হবে যাতে কাঙ্ক্ষিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।