বাড়ছে সাইবার অপরাধ
সবার আগে প্রয়োজন সচেতনতা
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতীকী ছবি
দেশে সাইবার অপরাধের পরিমাণ বাড়ছে। বুলিং কমলেও নতুন রূপে আবির্ভূত এই সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন সব শ্রেণির মানুষ। তবে এ অপরাধে সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু। মাধ্যমটিকে ব্যবহার করে আর্থিক প্রতারণাও বেড়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সাইবার অপরাধপ্রবণতা-২০২৩ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) ধারাবাহিকভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। চলতি বছরে পঞ্চমবারের মতো প্রকাশিত প্রতিবেদনে উদ্বেগজনক যে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে তা হচ্ছে, ২০১৮ সালে ৫টি জরিপে সাইবার অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীদের মাঝে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে অভিযোগ দেওয়ার প্রবণতা কমেছে। ২০১৮ সালে এ হার ছিল ৬১ শতাংশ, কিন্তু সবশেষ তা নেমে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশে। তবে অভিযোগ দেওয়ার হার কমলেও দেশে সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধের মাত্রা বেড়েছে ৩৮১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
আসলে অনলাইনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতারকরাও এ মাধ্যমটিকে ব্যবহার করছে। অনলাইনে কেনাকাটায় ব্যবহারকারীদের আগ্রহ বাড়ায় পণ্য কিনতে গিয়ে হরহামেশাই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন তারা। এছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে ঋণের নামে ফাঁদ পাতার অভিনব পদ্ধতিও চোখে পড়ার মতো। অনলাইনে জুয়ার বিষয়টিও চলছে গোপনে। সাধারণ মানুষ প্রতারকদের চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা দিয়ে অর্থ হারাচ্ছেন। প্রতারিত হওয়ার পর লজ্জা আর ঝামেলা এড়াতে তারাও আইনের শরণাপন্ন হচ্ছেন না। অনেকে আবার জানেন না, কীভাবে আইনি প্রক্রিয়ায় প্রতিকার মেলে। অবশ্য পর্নোগ্রাফি ব্যবহার করে হয়রানির পরিমাণ সাম্প্রতিক সময়ে কমতে দেখা গেছে। প্রতিবেদনের উল্লিখিত পরিসংখ্যান বলছে, ফটোশপে ছবি বিকৃত করে অনলাইনে প্রচারের হার ২০১৮ সালে ছিল ২২ দশমিক ৩১ শতাংশ, যা কমে ৭ দশমিক ৪৬ শতাংমে নেমেছে। আদতে অভিযোগের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় এই পরিমাণ কমেছে। যদিও আইডি ডিজেবল করে দেওয়া, চাকরির কথা বলে প্রতারণা ও মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে টাকা নেওয়ার মতো অপরাধ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
সাইবার অপরাধের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর, তবে তাদের কাছে ভুক্তভোগীদের আসতে হবে। প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রবণতা কমার পেছনে তাদের অজ্ঞতাই প্রধান কারণ। যার অর্থ হচ্ছে, এসব অপরাধ ঠেকাতে সবার আগে প্রয়োজন অনলাইন ব্যবহার ও আইনি সুবিধা পাওয়ার ব্যাপারে সচেতনতা। এ ব্যাপারে আইটি খাতের সরকারি-বেসরকারি সব পক্ষই এগিয়ে আসবে-এটাই প্রত্যাশা।