ভোজ্যতেল ও চিনির দাম: মূল্যবৃদ্ধির এ প্রবণতা কোথায় গিয়ে ঠেকবে?
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের মানুষ অস্বস্তিতে আছে। এ অবস্থায় নতুন করে ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সেই অস্বস্তি আরও বাড়বে। ভোজ্যতেলের আমদানিতে সরকারের ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ ৩০ এপ্রিল শেষ হওয়ায় নতুন করে দাম বাড়ানো হয়েছে। এদিকে চিনির বাজারের অস্থিরতাও কমছে না। তেল-চিনির পাশাপাশি সম্প্রতি আরেক দফা দাম বেড়েছে ডিম, পেঁয়াজ, রসুন ও আদার। বিভিন্ন রকম সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী।
বস্তুত নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে কোনো সুখবরই মিলছে না। এতে গরিব মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভোজ্যতেল ও চিনি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যে ধরনের কারসাজি চলছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। লক্ষ করা গেছে, কর্তৃপক্ষ অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যখন অভিযান পরিচালনা করেছে, তখন তেল ও চিনির বাজারের অস্থিরতা আরও বেড়েছে। এতে কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
রোজা সামনে রেখে সরকার চিনি আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিলেও বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। বাড়তি দামেই মানুষকে চিনি ক্রয় করতে হয়েছে। ভোজ্যতেল, চিনি, মসলা এসব পণ্য ছাড়া আমাদের একদিনও চলে না। কাজেই এসব পণ্য নিয়ে কেউ যাতে কারসাজি করতে না পারে, এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
প্রশ্ন হলো, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির এ প্রবণতা কোথায় গিয়ে ঠেকবে? গরিব মানুষের এ দুর্ভোগের অবসান কবে হবে? আমরা লক্ষ করেছি, সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকার পরও বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে দফায় দফায়। ভরা মৌসুমেও চালের বাজার অস্থির থাকে। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেয়। কিন্তু এরপর কী হয় তা আর জানা যায় না। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এসব বিষয় খতিয়ে দেখা উচিত। সব ধরনের নিত্যপণ্যের দামের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে নিুআয়ের মানুষ দিশেহারা, তার ওপর বাজারে কারসাজি চলতে থাকলে এ শ্রেণির মানুষ বাঁচবে কীভাবে?
বস্তুত অতিরিক্ত আমদানিনির্ভরতার কারণেই ভোজ্যতেল ও চিনির বাজার প্রায় সারা বছরই অস্থির থাকে। এক্ষেত্রে আমদানিনির্ভরতা কাটানোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। আশার কথা, ভোজ্যতেল ও চিনিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মূলত দুর্নীতি ও অব্যবস্থার কারণেই দেশের চিনিকলগুলো পরিণত হয়েছে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে। কাজেই এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সুফল পেতে হলে দুর্নীতি রোধে কঠোর হতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কৃষিঋণ বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। কৃষক ঋণ নিয়ে যাতে এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে সেজন্যও পদক্ষেপ নিতে হবে।