Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তি

বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তি

বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারত্বের বয়স ৫০ বছর পেরিয়েছে। পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের বিষয়টি বাদ দিলে এদেশের অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সহযোগী এই উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

সম্প্রতি বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থাটির সদর দপ্তরে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি পালিত হয়। সম্পর্ককে সম্মান জানাতে খোদ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছুটে যান ওয়াশিংটন ডিসিতে।

কর্মসূচির মধ্যে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাসকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া পদ্মা সেতুর একটি বাঁধাই করা ছবি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়।

অনিয়মের অভিযোগ তুলে যে সেতু নির্মাণের অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংক সরে এসেছিল, তারই ছবি সংস্থার প্রধানের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে বড় ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে অংশীদারত্ব সম্পর্কের অর্ধশত বছর উদযাপনের পাশাপাশি সংস্থাটির কাছ থেকে আরও সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য রয়েছে সরকারের। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার পথটি যাতে মসৃণ হয়, অর্থাৎ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে উত্তরণের জন্য ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের যে লক্ষ্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের রয়েছে, তা পূরণে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। সরাসরি এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার প্রতিফলন দেখা গেছে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সর্বশেষ ঋণ চুক্তিতে। বাংলাদেশের পাঁচ প্রকল্প বাস্তবায়নে ২২৫ কোটি ডলার বা প্রায় ২৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা ঋণ দিতে বিশ্বব্যাংক রাজি হয়েছে। এ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

তবে চুক্তি স্বাক্ষর হলেই যে তা বাস্তবায়িত হবে, সে নিশ্চয়তা এখনই কারও পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি থেকে সংস্থাটির সরে যাওয়া যার উদাহরণ। এছাড়া বিশ্বব্যাংক গত ৫০ বছরে বাংলাদেশকে কম সুদে ৪ হাজার কোটি ডলারের যে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাও আটকে গেছে। জানা গেছে, এর মধ্যে প্রতিশ্রুতির ৫৫ শতাংশ অর্থাৎ ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার ঋণ ছাড় হলেও বাকি ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার পাইপ লাইনে আটকে আছে। বিশ্বব্যাংকের দেওয়া শর্ত বাস্তবায়ন করতে না পারাই নাকি এর মূল কারণ, যার মধ্যে রয়েছে প্রকল্প অনুমোদনসহ আনুষঙ্গিক কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করতে না পারা।

অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের সফরে বরফ কিছুটা গলেছে বলেই অনেকের মত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনাও চূড়ান্ত হয়েছে। তাদের আশা, পদ্মা সেতু ঘিরে দুপক্ষের সম্পর্কের যে অবনতি ঘটেছিল, তা এবারের সফরে কাটিয়ে ওঠা গেছে। ফলে আটকে যাওয়া ঋণ ছাড় তো হবেই, ঋণের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। জেনে রাখা ভালো, গেল জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের মোট ঋণ ১৬ হাজার ৬১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৭ হাজার ২২৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার আর অভ্যন্তরীণ ঋণ ৯ হাজার ৩৮৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা ঋণের ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং জিডিপির ২২ দশমিক ১ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারত্ব ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম