Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পাইপলাইনে লিকেজ

তিতাসকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পাইপলাইনে লিকেজ

গত সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে রাজধানীর মগবাজার, গ্রিন রোড, মহাখালী, আজিমপুর, ধানমন্ডি, মালিবাগ, বাড্ডা, রামপুরা, বেইলি রোডসহ কয়েকটি এলাকায় গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে অনেক মানুষ আতঙ্কিত হয়ে বাসা থেকে রাস্তায় নেমে আসে।

আতঙ্কে কেউ কেউ গ্যাসের মেইন সুইচও বন্ধ করে দেয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, ওইদিন রাতে গন্ধ ছড়িয়ে পড়া এলাকাগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।

কারণ, কোনো কারণে আগুনের সংস্পর্শ পেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল। অবশ্য কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঢাকার ২১টি এলাকার পাইপলাইন বিভিন্ন শিল্পকারখানার লাইনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এসব এলাকার পাইপে গ্যাসের চাপ সাধারণত ৫ থেকে ৭ পিএসআই থাকলেও ঈদের ছুটির কারণে শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় ক্রমান্বয়ে গ্যাসের চাপ বেড়ে ৩০ পিএসআই’র বেশি উঠে যায়, এ কারণে পাইপলাইনের ছিদ্রপথে গ্যাস বের হয়ে পুরো এলাকায় গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

বস্তুত রাজধানীতে তিতাস গ্যাসের লাইনগুলো অনেক পুরোনো। প্রায় ১৪শ কোটি টাকা ব্যয়ে পুরো পাইপলাইন সংস্কারের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। চার বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও এখনো কেন এর বাস্তবায়ন হচ্ছে না, এ প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।

বিশেষ করে রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে একটি ভবনে গ্যাসজনিত বিস্ফোরণে অন্তত ২১ জনের মৃত্যু ও দেড় শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার পর প্রশ্নটি আরও বড় হয়ে দেখা দেয়। তিতাস গ্যাসের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ১৯৬৮ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে। তবে ৮০ ও ৯০-এর দশকে পাইপলাইনের ব্যাপক সম্প্রসারণ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি পাইপলাইন স্থাপনের আগে সেগুলোর টেকনিক্যাল লাইফ বিবেচনা করে ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপর্মা) তৈরি করা হয়। ১৯৭০ সালে যখন এই পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছিল, তখন এর টেকিনিক্যাল লাইফ ধরা হয়েছিল ৩০-৩৫ বছর। সে হিসাবে তিতাসের ৬০ শতাংশের বেশি পাইপলাইনের বয়স ৫৫ থেকে ৬০ বছরের অধিক। এছাড়া বর্তমানে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে প্রায় ৫০ হাজার সংযোগ আছে যেগুলোর লাইন কেটে দেওয়া হলেও গ্রাহকের আঙিনায় ‘রাইজার’ রয়ে গেছে। এসব সংযোগ ব্যবহার করে বেশকিছু গ্রাহক পরে অবৈধভাবে পুনরায় গ্যাস সংযোগ নিচ্ছেন।

এমন অবৈধ সংযোগের কারণেও এগুলো থেকে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। দেশে গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণজনিত ঘটনা অনেকবারই ঘটেছে এবং এতে অনেকেই হতাহত হয়েছেন। এসব অভিজ্ঞতার পাশাপাশি সাম্প্রতিক ঘটনা থেকে দেশের সর্ববৃহৎ গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানি তিতাস আরও দায়িত্বশীল হবে, এটাই প্রত্যাশা।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম