Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

শিক্ষার্থী ঝরে পড়া

আর্থিক ও সামাজিক বাধা দূর করতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শিক্ষার্থী ঝরে পড়া

সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বিদ্যালয় গমনোপযোগী প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও প্রাথমিক স্তর শেষ করার আগেই উলে­খযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে; যদিও ঝরে পড়ার হার অতীতের তুলনায় কমেছে।

এছাড়া মাধ্যমিক স্তর শেষ করার আগে আরও উলে­খযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। জানা যায়, মাধ্যমিক স্তরে মাত্র দুই বছরে ঝরে পড়েছে পৌনে ছয় লাখ শিক্ষার্থী।

দেশে শিক্ষা ব্যয় বেড়েই চলেছে। এটি দরিদ্র মানুষের জন্য একটি বড় চিন্তার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষের আয় কমেছে। বেকারত্বের হারও বেড়েছে উদ্বেগজনকভাবে। উদ্ভ‚ত পরিস্থিতিতে দরিদ্র পরিবারে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বাড়ছে।

দেশে বর্তমানে এসএসসি বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতায় কোনো চাকরি পাওয়া যায় না। যেসব শিক্ষার্থী মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা শেষ করার আগেই ঝরে পড়ে, তারা তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কাজে লাগানোর কোনো সুযোগ পায় না। যারা দক্ষ জনশক্তি হিসাবে আ ত্মপ্রকাশের সুযোগ পায় না, তারা তাদের অর্জিত শিক্ষা দ্রুত ভুলে যায়। দেশের বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী অদক্ষ থাকলে তা অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। অথচ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এ যুগে দেশের সব জনগোষ্ঠীকে দক্ষ হিসাবে গড়ে তোলা জরুরি হয়ে পড়েছে। করোনাকালে ভার্চুয়াল মাধ্যমে লেখাপড়া অব্যাহত রাখা হলেও উপকরণের অভাবে অনেকে যথাযথভাবে শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেনি। এ কারণে আ ত্মবিশ্বাসের অভাবে বহু শিক্ষার্থী এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকছে। আশা করা যায়, পরের বার এদের অনেকেই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেবে। নানা রকম সামাজিক কারণেও দেশে বহু শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। তাই মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপও নেওয়া দরকার। বিয়ের পর মেয়েদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিষয়ে সব পক্ষের আগ্রহই শূন্যের কোঠায় চলে যায়। এ কারণে মেধা থাকা সত্তে¡ও বহু নারী শিক্ষার্থী দক্ষ কর্মী হিসাবে আ ত্মপ্রকাশের সুযোগ পান না। এসব সামাজিক বাধা দূর করার পদক্ষেপ নিতে হবে।

সমাজের একেবারে নিঃস্ব ব্যক্তিটিও চান তার সন্তান প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। বস্তুত অর্থাভাবে দেশে বহু শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। কাজেই দারিদ্র্য দূর করা না গেলে শিক্ষাক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জন করা কঠিন হবে। বিনামূল্যে বই প্রদানসহ নানা রকম পদক্ষেপ নেওয়ার পরও কেন শিশুদের স্কুলে ধরে রাখা যাচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। শিক্ষা উপকরণ প্রদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্কুল চলাকালে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার প্রদানের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হলে আশা করা যায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমবে। বিভিন্ন জরিপের তথ্য থেকে জানা যায়, এখনো দেশে মাধ্যমিকসহ বিভিন্ন স্তরের বহু শিক্ষার্থী মৌলিক জ্ঞান অর্জনে কাক্সিক্ষত দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি। বস্তুত সব বিষয়েই শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জন নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য শিক্ষকদের অব্যাহত প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে এবং মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহী করতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। দেশে মেধানির্ভর জনশক্তি তৈরি করতে শিক্ষার মান বাড়ানোর বিকল্প নেই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম