Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

সিদ্দিকবাজারে ভবনে বিস্ফোরণ: গ্যাস-অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়.

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সিদ্দিকবাজারে ভবনে বিস্ফোরণ: গ্যাস-অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে

রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় একটি ভবনে বিস্ফোরণের একদিন পর মঙ্গলবার বিকালে গুলিস্তানের পাশে সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে আবারও একটি ভবনধসের ঘটনা ঘটেছে।

এবারের বিস্ফোরণ আরও ভয়াবহ ও মর্মান্তিক। এই সম্পাদকীয় লেখার সময় পর্যন্ত এ ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক ব্যক্তি।

এর মাত্র দুদিন আগেই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি বেসরকারি অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।

এখন পর্যন্ত এসব ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসাবেই দেখা হচ্ছে, যদিও পরপর তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি রাখে।

সায়েন্সল্যাব ও সিদ্দিকবাজার-দুটি ঘটনায়ই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা গ্যাস এসব বিস্ফোরণের কারণ। সেক্ষেত্রে এরকম আরও কত ভবনে গ্যাস জমে আছে এবং সেগুলো কতটা ঝুঁকি বহন করছে, এ প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। ফলে মানুষের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৭ জুন রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকার একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২ ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ওই বিস্ফোরণের কারণও জমে থাকা গ্যাস বলে ধারণা।

গ্যাস থেকে দুর্ঘটনার ঘটনা দেশে নতুন নয়। কয়েক বছর আগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি মসজিদে গ্যাসজনিত বিস্ফোরণে ৩০ জনেরও বেশি মুসল্লির মৃত্যু হয়। জানা যায়, ওই মসজিদ এলাকায় তিতাস গ্যাসের লিকেজ ছিল এবং এ সম্পর্কে একাধিকবার তিতাস কর্তৃপক্ষকে জানানোও হয়েছিল। তারপরও কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা মনে করি, যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ, এর ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট সবারই সতর্ক হওয়া উচিত। রাজধানীর মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া হয়েছে অসংখ্য গ্যাসলাইন। এসব লাইনের কোথাও লিক রয়েছে কি না, কোনো ভবনের কোনো কক্ষে গ্যাস জমা হচ্ছে কি না-এসবের নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থার পাশাপাশি ভবনের বাসিন্দা বা কর্মচারীদেরও দায়িত্ব রয়েছে।

পরপর কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা দেখিয়ে দিল আমাদের চারপাশে কীভাবে ওত পেতে আছে মৃত্যু। উদ্বেগের বিষয় হলো, রাজধানীসহ সারা দেশে এরকম বহু ভবনই রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। বিভিন্ন ভবনে অগ্নিকাণ্ড, পুরান ঢাকায় রাসায়নিক বিস্ফোরণ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিস্ফোরণ প্রভৃতি ঘটনা এর প্রমাণ। কিন্তু এত সমস্যার পরও এর সমাধানের উদ্যোগ না নেওয়া এবং দেখেশুনে চোখ বুজে থাকা যেন আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে এবং সবাই যেন দুর্ঘটনাকে নিয়তি হিসাবে মেনে নিয়েছি। অন্যথায় নিমতলি ও চুড়িহাট্টার বিস্ফোরণের এত বছর পেরিয়ে গেলেও পুরান ঢাকা থেকে সরানো হয়নি কেন রাসায়নিকের গুদাম ও ব্যবসা?

বড় ভবনগুলোয় অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়ে এখনো বেশির ভাগ মানুষ উদাসীন; এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও চুপচাপ। এ নির্লিপ্ততার অবসান ঘটানোর সময় এসেছে। দেশে প্রায়ই নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলেও উদ্ধার প্রক্রিয়া এখনো শক্তিশালী নয়। এ বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সরকারের আশু কর্তব্য বলে মনে করি আমরা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম