Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস

নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পালন করলেও নানা কারণে ভোক্তাদের দুর্ভোগের অবসান হয় না। রাজধানীর কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তালিকা প্রকাশ করে থাকে। অথচ এসব তালিকার একটির দামের সঙ্গে অন্যটির কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। শুধু তাই নয়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বাজারগুলোতে তালিকা টানানোর বিধান থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা অনুপস্থিত। দ্রব্যমূল্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি মনিটরিংয়ের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে দায়িত্ব পালন করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। কিন্তু বাস্তবে সেটিরও তেমন কোনো কার্যকারিতা দেখা যায় না। বস্তুত কোনো তালিকার তোয়াক্কা না করে বিক্রেতারা খেয়ালখুশিমতোই দাম রাখছেন। এ ছাড়া রয়েছে সিন্ডিকেটের কারসাজি। এ অবস্থায় উচ্চমূল্যে নিত্যপণ্য কিনতে গিয়ে ভোক্তাদের দম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, প্রতিদিনের বাজারের মূল্যতালিকা প্রকাশ করে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। পাশাপাশি প্রতিটি বাজারে বড় সাইনবোর্ডে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মূল্যতালিকা টানিয়ে দেওয়া এবং দোকানগুলোতে আলাদাভাবে মূল্যতালিকা টানানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কোনো কোনো পাইকারি ও খুচরা কাঁচাবাজারে মূল্যতালিকা খুঁজে পাওয়া যায় না। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের রয়েছে নানা অজুহাত। এমনিতেই অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে প্রতিনিয়ত ভোক্তাদের অবর্র্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পণ্যের মূল্যতালিকা নিয়ে হযবরল অবস্থা বিরাজ করলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নেবে, এটাই স্বাভাবিক। বহুদিন ধরে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দরে। ফলে নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রেতার দীর্ঘশ্বাস বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে গরিব মানুষ। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েই চলেছে। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়বে। বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ কারণে ভিন্ন ভিন্ন পণ্যের দামে অস্থিরতা থাকবে যা বহুদিন ধরে আলোচনায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা যাতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে সেদিকে কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

প্রতিবছর রমজান মাস শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগেই বাজারে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যায়। এবারও একই ধরনের তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। অসাধু সিন্ডিকেট সম্প্রতি ধাপে ধাপে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে চলেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। সরকারের পক্ষ থেকে ভোক্তাদের স্বস্তির বিষয়ে নানারকম আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে ভোক্তারা এসব আশ্বাসের সুফল পায় না। বর্তমানে সীমিত ও নিুআয়ের মানুষ এমনিতেই পরিবারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে দরিদ্র মানুষ সময়মতো ঋণও পাচ্ছে না। নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে এ দুর্ভোগ অব্যাহত থাকলে এর অনিবার্য পরিণতি হিসাবে দরিদ্র ও স্বল্পআয়ের মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে যাতে ভোক্তারা এর সুফল পায়। বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সিন্ডিকেটের সদস্যদের যোগসাজশের বিষয়টি বহুল আলোচিত। অসাধু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচিত সংস্থাগুলোর কোনো সদস্যের যোগসাজশ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখে কোনো অনিয়ম পেলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম