Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

‘ব্রিটিশ কাউন্সিল ভবনে’ রাজশাহী বিএনপির কার্যালয়

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাজশাহী নগরীর মালোপাড়ায় ব্রিটিশ কাউন্সিল ভবনে বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা ও মহানগর বিএনপির নতুন কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। স্থানীয় বিএনপির দুই নেতা এ সম্পত্তি কিনেছেন। তবে এটি সরকারি সম্পত্তি দাবি করে দুই নেতার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। আদালতে সেই মামলা চলমান।

তবে হঠাৎ করে বুধবার রাতে ওই ভবনের সামনেই বিএনপির রাজশাহী জেলা ও মহানগরের সাইনবোর্ড লাগানো হয়। এরপর বৃহস্পতিবার জাতীয় ও দলীয় পতাকা টাঙিয়ে এবং পায়রা উড়িয়ে ও ফিতা কেটে দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। এ সময় সদস্য সচিব মামুনুর রশিদসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আগে জেলা ও নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় ছিল নগরীর ভুবনমোহন পার্কসংলগ্ন একটি ভবনে। চারতলা ভবনটির দোতলায় দুটি কক্ষ দলীয় কার্যালয় হিসাবে ২০২১ সালের ১ আগস্ট থেকে মাসিক ১২ হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ভবন মালিক আবদুল ওহাব পরের মাসেই তাদের কক্ষ ছাড়ার নোটিশ দেন। এরপর উকিল নোটিশ দেন। তারপরও বাড়ি না ছাড়লে তিনি রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে এর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন।

এরপর সেপ্টেম্বরে কক্ষ দুটি ছেড়ে দেয় বিএনপি। পরে নগরীর সোনাদীঘিসংলগ্ন একটি ভবনে জেলা ও মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় হিসাবে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়। এ ভবনটি জেলা পরিষদের জায়গায় বলে তখন বিতর্ক ওঠে। এরপর এই ভবনটিও ছেড়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকে জেলা ও নগর বিএনপির কোনো কার্যালয় ছিল না। বৃহস্পতিবার নতুন ঠিকানায় কার্যালয় হলো।

রাজশাহীতে দীর্ঘদিন এ জমিতে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কার্যক্রম চলেছে। পুরোনো ভবনটি ‘ব্রিটিশ কাউন্সিল ভবন’ নামেই পরিচিত। ওই ভবনে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পর হাফিজুল ইসলাম সোহেল নামের একজন ব্যবসায়ী ভাড়া নিয়েছিলেন। চার্চ অব বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ভাড়ার টাকা নিত। জমিটি শহরের প্রাণকেন্দ্র ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বোয়ালিয়া মৌজায়। জমির পরিমাণ ছয় কাঠা। এর মধ্যে সাড়ে চার কাঠা জমি চার্চ অব বাংলাদেশের কাছ থেকে কিনেছেন বলে দাবি করছেন মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা ও রাজপাড়া থানা বিএনপির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান। তবে ওই জমি নিয়ে ভয়াবহ জালিয়াতি হয়েছে দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু।

মামলার আরজিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু উল্লেখ করেছেন, এ জমির মূল মালিক ছিলেন মিস্টার হেমিলটন সাহেব ওরফে হেলিটন সাহেব। তার ঠিকানা দেওয়া রয়েছে নগরীর মহিষবাথান এলাকা। বিগত সিএস, এসএ ও আরএস রেকর্ড মূলে নালিশি সম্পত্তি মিস্টার হেমিলটন সাহেব ওরফে হেলিটন সাহেবের নামে রেকর্ড হয়ে চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হয়েছে। আরএস রেকর্ডে মন্তব্য কলামে দখল ব্রিটিশ কাউন্সিল লেখা রয়েছে। ৭ আগস্ট সর্বপ্রথম মামলার বিবাদী নজরুল হুদা ও মিজানুর রহমান নালিশি সম্পত্তিতে উপস্থিত হয়ে দলিল মূলে স্বত্ব দাবি করেন এবং সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের ঘোষণা দেন। কিন্তু তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন যে, মিস্টার হেমিলটন সাহেব নালিশি সম্পত্তি হস্তান্তর না করলেও চার্চ অব বাংলাদেশের ভুয়া সভাপতি সেজে রেভা. সুনীল মানখিন জাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে বেআইনি ও জালিয়াতির মাধ্যমে এ জমি বিক্রি করেছেন।

জমির দুই ক্রেতার একজন মিজানুর রহমান বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে মিজানুর রহমান মিনু ওই মামলা করেন। আমরা আদালতে আমাদের সব কাগজ দাখিল করেছি। মামলার পর আদালত ওই জমিতে স্থিতাবস্থা জারি করেছিলেন। কাগজ দেওয়ার পর স্থিতাবস্থা তুলে নিয়েছেন। তবে মামলা এখনো শেষ হয়নি। ৬ মাস পর এ মামলার ধার্য তারিখ পড়েছে।’

তিনি জানান, কয়েকদিন আগে জমির আরেক অংশীদার বিএনপি নেতা নজরুল হুদা তাকে জানান যে এ ভবনটি জেলা ও মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় হিসাবে ভাড়া দিতে চান। তাই তিনি রাজি হন। ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মাসের জন্য ভবন ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, তারা দুজনে সাড়ে ৪ কাঠা জমির মালিক। ভবনের পেছন দিকে এখনও দেড় কাঠা আছে চার্চ অব বাংলাদেশের। বিএনপিকে দলীয় কার্যালয় হিসাবে ভাড়া দেওয়ায় তাদেরও কোনো আপত্তি নেই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম