বিভাগীয় শহরে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, নানা আয়োজন
বিজয় ধরে রেখে বৈষম্যহীন দেশ গড়ার প্রত্যয়
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শহিদস্মৃতি নামফলকে বরিশাল মহানগর বিএনপির শ্রদ্ধা -যুগান্তর
যথাযোগ্য মর্যাদায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সোমবার মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা, বিজয় শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান, বিশেষ মোনাজাত, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণী। স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি থেকে বক্তারা বিজয় ধরে রেখে বৈষম্যহীন দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বলেন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাবে দেশ। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রাজশাহী : জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরের শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানান বিভাগীয় কমিশনার ড. খোন্দকার আজিম আহমেদ, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আলমগীর রহমান, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামানসহ বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা। সকাল ৯টায় সার্কিট হাউজ চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিভাগীয় কমিশনার। এরপর জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বিজয় মেলার উদ্বোধন করা হয়। জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা পর্যায়ের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকাল ৮টায় রাজশাহী কলেজের শহিদ মিনারে ফুল দেন মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষক দলের নেতারা। বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মহানগরে বিশাল বিজয় শোভাযাত্রা করে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির। সকাল ৯টায় হেতেমখাঁ থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
খুলনা : ভোরে খুলনার বয়রাস্থ মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা করা হয়। গল্লামারী শহিদ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ও মহানগর ইউনিট, বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, কেসিসির প্রশাসক, রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক, পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার। এ সময় রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক, পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। পরে সেখানে দিনব্যাপী বিজয়মেলা উদ্বোধন ও আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগর ভবনে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সিলেট : কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, সিলেট সিটি করপোরেশন, পুলিশ সুপার, এসপি আরআরএফ কমান্ড্যান্ট ও এসপি এপিবিএনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর সিলেট জেলা, মহানগর বিএনপি ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও সামাজিক সংগঠন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রশিবির, বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন শোভাযাত্রা করে।
ময়মনসিংহ : ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা হয়। পরে নগরীর পাটগুদাম ব্রিজমোড়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ। এরপর রেঞ্জ ডিআইজি ড. মো. আশরাফুর রহমান, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম, সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, জেলা পরিষদের প্রশাসক, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু তাহের, সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ, সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান রানা, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারাসহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সকালে নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম।
বরিশাল : নগরীর পুলিশ লাইন্স মাঠে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবসের সূচনা করা হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি নামফলকে ফুলের শ্রদ্ধা জানান বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওসার, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মঞ্জুর মোর্শেদ আলম, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এ ছাড়াও বরিশাল মহানগর ও জেলা বিএনপির (দক্ষিণ) পৃথক শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন ও সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহিন প্রমুখ। এর আগে পৃথক সংক্ষিপ্ত সভায় অংশ নেন সেলিমা রহমান। দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখার ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বেলা ১১টায় জেলা পর্যায়ের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রংপুর : ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। এরপর রংপুর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহীদুল ইসলাম, পুলিশের রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল ও পুলিশ সুপার শরীফ আহমেদ। এরপর জেলার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানায়। রংপুর জিলা স্কুল মাঠে দিনব্যাপী বিজয় মেলার উদ্বোধন করা হয়। রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এতে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অতিথি ছিলেন। বিজয় দিবসে রংপুরে বিজয় শোভাযাত্রা বের করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি রংপুর জেলা ও মহানগর। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাশাপাশি নগরীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও বিজয় শোভাযাত্রা বের করে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজনে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলীর নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে স্বাধীনতা স্মারক স্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়। ১২টা ১ মিনিটে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জাতীয় পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, জাসদ, বাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ জাসদ, প্রেস ক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাব।