নানা কৌশলে ঢুকছে চালান
কারাগারে মাদক ঠেকাতে ডগ স্কোয়াডের তল্লাশি
সফলতা পেলে সব কারাগারেই মোতায়েন -কারা মহাপরিদর্শক
ইকবাল হাসান ফরিদ
প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
দেশের অনেক কারাগারে দেদার ঢুকছে মাদক। বন্দিদের পাশাপাশি মাদক বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন কারারক্ষীরাও। বাইরে থেকে পাকস্থলিতে করে কারা অভ্যন্তরে আনা হয় মাদক। এমন অবস্থায় কারাগারে মাদকের আগ্রাসন রুখতে ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে তল্লাশির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে রোববার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে ডগস্কোয়াডের মাধ্যমে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এভাবে মাদকের আগ্রাসন ঠেকানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদী কারা প্রশাসন।
কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন রোববার সন্ধ্যায় যুগান্তরকে বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার ও কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে দুটি করে ডগস্কোয়াড মোতায়েন করেছি। আমাদের প্রধান ফোকাস হবে মাদক। আমাদের কাছে কারারক্ষী, বন্দিদের মাধ্যমে ভেতরে মাদক প্রবেশ করে এমন অভিযোগ আসছে। তাই এই দুটি কারাগারে ডগস্কোয়াডের মাধ্যমে সফলতা পেলে গুরুত্বপূর্ণ এবং মাদকপ্রবণ অন্যান্য কারাগারেও আমরা ডগস্কোয়াড মোতায়েন করব। তিনি বলেন, এসব ডগকে মাদক উদ্ধারসহ অন্যান্য বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নানা কৌশলে মাদকের চালান যায় কারা অভ্যন্তরে। বিভিন্ন জিনিসপত্রের মধ্যে ঢুকিয়ে, আবার কখনো কখনো বন্দি বা কারারক্ষীদের পাকস্থলিতে করে মাদকদ্রব্য কারা অভ্যন্তরে নেওয়া হচ্ছে। কারা কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই মাদকের বাণিজ্য চলে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আসা একজন বন্দি যুগান্তরকে বলেন, ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল থেকে শুরু করে এমন কোনো মাদক নেই যা কারাগারে পাওয়া যায় না। তাছাড়া প্রভাবশালী কিছু বন্দি আছেন, তারা যা চান তাই পান কারা অভ্যন্তরে। তবে তার মতে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কারাপ্রশাসনে রদবদল হয়েছে। বর্তমানে কারাগারের পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার যুগান্তরকে বলেন, রোববার থেকে এখানে দুটি ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়েছে। এসব ডগ স্কোয়াড হ্যান্ডেলিং করছেন সেনা সদস্যরা। কারাগারের নিরাপত্তার পাশাপাশি মাদকদ্রব্য ও অন্য কোনো অবৈধ জিনিস যাতে কারা অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে না পারে সেই লক্ষ্যেই এই ডগ স্কোয়াড কার্যক্রম চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা ম্যানুয়াল চেক অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি কোনোভাবেই যাতে কারা অভ্যন্তরে মাদকসহ অবৈধ কোনো জিনিস প্রবেশ না করতে পারে সেজন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কারা অধিদপ্তরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক মো. জান্নাত-উল-ফরহাদ জানান, কারাগারে আগত বন্দি, দর্শনার্থী ও গার্ডিং স্টাফদের প্রবেশপথসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান, আরপি গেট ও মূল ফটকে ডগস্কোয়াড তল্লাশি করবে।