কোটা সংস্কার আন্দোলন
সুপ্রিমকোর্ট বারের পালটাপালটি সংবাদ সম্মেলন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি : সংগৃহীত
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী স্লোগান দেওয়ার প্রতিবাদে এবং আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছেন সুপ্রিমকোর্ট বারের আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে মঙ্গলবার দুপুরে তারা পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেন।
প্রথমে কোটা আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী স্লোগান দেওয়ার প্রতিবাদে সমিতির সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হকের নেতৃত্বে সরকার সমর্থক ১০ জন কার্যকরী কমিটির নেতা উপস্থিতি থেকে সংবাদ সম্মেলন করেন। পরে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের নেতৃত্বে বিএনপি সমর্থক চারজনের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করেন, তারা ভাষা আন্দোলনসহ প্রগতিশীল সব সংগ্রামের অংশীদার। সেখানে পড়াশোনা করে তারা যদি নিজেদের রাজাকার বলে দাবি করেন, আন্দোলন চালান, ধরে নিতে হবে তাদের পেছনে কোনো অশুভ শক্তি কাজ করছে।
তিনি বলেন, রাজাকার বলে স্লোগান দেওয়ার বিষয়ে সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাই, ধিক্কার জানাই। তাদের অনুরোধ করব এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে আন্দোলন প্রত্যাহার করে আদালতের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে। নির্বাহী বিভাগের কাছে দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের এ দাবি অযৌক্তিক, অসাংবিধানিক ও বেআইনি। কারণ আন্দোলন একটি বৈধ বা যৌক্তিক দাবির জন্য। সব কোটা প্রথা বহাল করেছেন হাইকোর্ট বিভাগ। এটি পরীক্ষা করবেন আপিল বিভাগ। আদালতের কার্যধারা বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর জন্য এখন তাদের আন্দোলন থেকে বিরত থাকার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আর তারা এখন নির্বাহী বিভাগের দাবির মধ্যেও নেই। তিনি আরও বলেন, গতকাল তারা (আন্দোলনকারী) বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংসদে আইন করতে হবে। আমি বলছি এটি আইন প্রণয়নের কোনো বিষয় নয়। এটি হলো প্রজ্ঞাপনের বিষয়।
অপরদিকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, গতকাল (সোমবার) অনেক ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছেন। মেয়েদের হেনস্তা করা হয়েছে। পুলিশ পেছনে ছিল। সরকারি দল সামনে ছিল। গণমাধ্যমে এসেছে কীভাবে মেরেছে। কয়েকশ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। রক্তাক্ত হয়েছেন। আন্দোলন হলো মৌলিক অধিকার। দেশে কি মৌলিক অধিকার নেই?
তিনি বলেন, মৌলিক অধিকার থাকলে এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে? এখানে পুলিশের ভূমিকা কী ছিল? পুলিশের কোনো ভূমিকা ছিল না। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। সেখানেও ছাত্রলীগের লোকজন হামলা করেছেন। আমরা কি সভ্য দেশে আছি? এ পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে বিবৃতি আসেনি।
ব্যারিস্টার খোকন বলেন, প্রধানমন্ত্রী সরাসরি কোটার পক্ষে অবস্থান নিয়ে আদালত অবমাননা করেছেন। কারণ বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০১৮ সালে রাগের বশবর্তী হয়ে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছিলেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার সময় তিনি অঙ্গীকার করেছেন রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। একথা বলে প্রধানমন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন। তিনি বলেন, ন্যক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, তাদের আইনি সহায়তা দেব।