রাজশাহী মেডিকেল কলেজ
চার বছরেও শেষ হয়নি সাবস্টেশন স্থাপন
বিল তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার
আনু মোস্তফা, রাজশাহী
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিফট কেলেঙ্কারির পর মেডিকেল কলেজে বিদ্যুতের সাবস্টেশন স্থাপন নিয়ে বেরিয়ে এসেছে অনিয়মের আরেক ঘটনা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে একটি সাবস্টেশন স্থাপনের ৬ মাসের কাজ গত ৪ বছরেও শেষ হয়নি। ২০২০ সালের ২২ এপ্রিল ঠিকাদারকে এ কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। কাজটি শেষ করার কথা ছিল কার্যাদেশ পরবর্তী ৬ মাস। তবে কাজ শেষ না হলেও ঠিকাদারকে কাজের সব বিল পরিশোধ করেছেন রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর কর্মকর্তারা। ঘটনাটি জানাজানির পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. নওশাদ আলী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
২ কোটি ৬৭ লাখ ৬৬ হাজার ৬৫৭ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ভবনসহ একটি ১০০০ কেভিএ বিদ্যুতের সাবস্টেশন ও ৫০০ কেভিএ জেনারেটর স্থাপনের জন্য রংপুরের ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ আলীকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। তবে কাজটি ঠিকাদার নিজে না করে রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাইনুল চৌধুরী ওরফে শান্ত চৌধুরীর কাছে বিক্রি করে দেন। বদলি ঠিকাদার শুধু বিদ্যুতের সাবস্টেশনের ঘর তৈরি করেই কাটিয়ে দিয়েছেন গত ৪ বছর। তবে ঠিকাদার ভবন নির্মাণ ও সাবস্টেশন স্থাপন শেষে সেটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর না করেই ২ বছর আগেই কাজের পুরো বিল উত্তোলন করে নেন। ২০২০ সালে কাজটির কার্যাদেশ দেওয়ার সময় রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন ফেরদৌস শাহনেওয়াজ কান্তা। পরে তার স্থলাভিষিক্ত হন প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমানকে রাজশাহী থেকে পাবনা গণপূর্ত বিভাগে বদলি করা হয়। তার আমলেই কাজ শেষ হওয়ার আগেই ঠিকাদারকে সব বিল পরিশোধ করা হয়। বর্তমানে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে আছেন এএইচএম শাকিউল আজম। তিনি এ কাজের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. নওশাদ আলী বলেন, গণপূর্ত বিভাগ বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপনের কাজ করছে অনেকদিন ধরে। কিন্তু কাজটি শেষ হয়নি গত ৪ বছরেও। সম্প্রতি আমরা গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীদের ডেকে নিয়ে কাজের অগ্রগতি জানতে চেয়েছিলাম। অধ্যক্ষ দীর্ঘ ৪ বছরেও সাবস্টেশনটি চালু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বদলি ঠিকাদার মাইনুল চৌধুরী ওরফে শান্ত চৌধুরী বলেন-করোনা মহামারির কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা যায়নি। আবার গণপূর্তের টাকা ছিল না। সাবস্টেশনের জন্য নেসকো ও বিদ্যুৎ লাইসেন্স বোর্ডের অনুমতি পেতেও দেরি হয়েছে। দ্রুত সময়ে কাজটা শেষ করে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।