Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

অতি লোভে কারবারে জড়াচ্ছেন অনেকে

ঈদ সামনে রেখে জাল টাকার মার্কেটিং

১ লাখ জাল টাকা ১৫ হাজারে বিক্রি

Icon

ইকবাল হাসান ফরিদ

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঈদ সামনে রেখে জাল টাকার মার্কেটিং

ফাইল ছবি

ঈদ সামনে রেখে চলছে জাল টাকার ডিজিটাল মার্কেটিং। কারবারিরা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করছে এসব নোট। এক লাখ টাকার জাল নোট অফার করছে ১৫ হাজার টাকায়। এতে অতি লোভে অনেকেই জড়িয়ে পড়ছেন এ অবৈধ কারবারে।

ফেসবুকে জাল টাকা বিক্রির বেশকিছু গ্রুপ রয়েছে। এসব গ্রুপে প্রতিদিন বিজ্ঞাপন পোস্ট করছে কারবারিরা। কমেন্টে গ্রুপ মেম্বারদের অনেকে জালনোট নিতে আগ্রহও প্রকাশ করছে। অনুসন্ধানে এমন ভয়াবহ তথ্য পাওয়া গেছে।

এ গ্রেট জাল নোট নামে একটি পাবলিক গ্রুপের মেম্বার সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। এই গ্রুপে বুধবার বিকাল সোয়া ৪টায় এমডি আহসান হাবিব নামে একজন জাল টাকা বিক্রির বিজ্ঞাপন পোস্ট করেন। এতে তিনি লেখেন, ‘যারা সরাসরি এসে মাল নিতে পারবেন শুধু তারাই...।’ এতে একটি মোবাইল নাম্বারও দেওয়া হয়। সেই নাম্বারে ফোন করা হলে যিনি রিসিভ করেন তিনি বলেন, সরাসরি এসে মাল নিতে হবে, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ থেকে। এ গ্রেডের এক লাখ টাকা ঈদ উপলক্ষ্যে দাম পড়বে ১৫ হাজার টাকা। অন্য সময়ে আমরা ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করি।

একই গ্রুপে মোহাম্মদ মিয়াদ হোসাইন নামে একটি আইডি থেকে মঙ্গলবার ২০০ টাকার জালনোটের ছবি দিয়ে একটি পোস্ট করা হয়েছে। এতে লেখা হয়েছে-‘কালকে ঢাকায় যাত্রাবাড়ী-জুরাইন-শনিরআখড়া এলাকাতে দিতে পারব। ২৫ হাজার টাকা আছে ৭৫০০ টাকা পড়বে।’ মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করা হলে অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয় জুরাইন এসে মাল সংগ্রহ করতে হবে। ওই পোস্টের কমেন্ট বক্স ঘেঁটে দেখা গেছে, জাল টাকা কিনতে অনেকেই আগ্রহ দেখিয়েছে। তাদেরকেও পালটা কমেন্টে জুরাইনে যেতে বলা হয়েছে। মামুন পারভেজ নামে একজন আগ্রহ প্রকাশ করে লিখেছেন, খিলগাঁওয়ে পৌঁছে দিবেন? তাকে উত্তরে বলা হয়েছে, রাইদা বাসে করে জুরাইন আসেন। শাহেদুল ইসলাম নামে একটি আইডি থেকে বলা হয়েছে ১০,০০০ টাকা দিতে পারবেন? উত্তরে বলা হয়েছে একসঙ্গে ২৫ হাজার নিতে হবে।

শুধু এই একটি গ্রুপই নয়, শুধু ফেসবুকে জাল টাকা বিক্রির অর্ধশতাধিক গ্রুপ রয়েছে। জালনোট বিক্রি করি, জাল টাকা বিক্রি করিসহ বিভিন্ন নামে ওপেন গ্রুপ, প্রাইভেট গ্রুপ এমনকি বিভিন্ন সিক্রেট গ্রুপে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি হচ্ছে জালনোট। তাদের কেউ কেউ কুরিয়ারে বিভিন্ন পণ্যের নামে টাকা পাঠানোর কথাও বলছেন। বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য জালনোটের ছবিও দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পোস্টে। এমনকি কাস্টমার ধরতে জাল টাকা তৈরির ভিডিও দিয়েও ফেসবুক এবং ইউটিউবের মাধ্যমে নজর কাড়ছে জালনোটের ব্যবসায়ীরা। র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোসতাক আহমেদ জানান, ৬ মার্চ মিরপুরের একটি বাসা থেকে জাল নোট বিক্রি চক্রের চার সদস্য পারভেজ হোসেন, রুবেল ইসলাম ওরফে হৃদয়, নুর আলম ওরফে আরাফাত ও মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মোস্তাকিমকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে পারভেজ জাল নোট ছাপানো চক্রের মূল হোতা। তিনি মূলত সামাজিক মাধ্যমে পেজ ও ওয়েবসাইটে জাল টাকা কেনাবেচার নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন। এসব পেজ ও ওয়েবসাইট প্রমোটের মাধ্যমে অনেক পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সংগ্রহ করেন পারভেজ। ঈদুল ফিতরকে টার্গেট করে বিপুল পরিমাণ জাল নোট ছাপাতে শুরু করেছিল ওই চক্র। তারা প্রতি ১ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোট ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করত।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জাল নোটের কারবারিদের ওপর বিশেষ নজরদারি করছে র‌্যাব। সাইবার মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক অনলাইনে নজরদারি করছে। অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িতদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) লিটন কুমার সাহা বলেন, অনলাইনে জাল টাকার কারবারিদের নিয়ে ডিবির সাইবার ইউনিট কাজ করছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম