সংরক্ষিত নারী আসন
এমপি হতে তৎপর চট্টগ্রামের এক ডজন নেত্রী
এমএ কাউসার, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হতে চট্টগ্রামে আওয়ামী মহিলা লীগের এক ডজনেরও বেশি নেত্রী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে অনেকেই ঢাকায় অবস্থান করছেন। সংরক্ষিত আসনে চট্টগ্রাম থেকে দুজনকে নির্বাচন করা হবে। চট্টগ্রাম উত্তর থেকে একজন এবং দক্ষিণ থেকে একজন নির্বাচিত হবেন। আগামী মাসে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে। দলীয় সূত্রে এসব জানা গেছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংরক্ষিত আসনের এমপি হতে চট্টগ্রামের ৬৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দুজনকে সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচন করা হয়। তারা হলেন- চট্টগ্রাম দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে ওয়াসিকা আয়শা খান এবং চট্টগ্রাম উত্তরে প্রয়াত সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। তবে সনি এবার ফটিকছড়ি আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে সরাসরি ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খানকে টেকনোক্রেট কোটায় মন্ত্রী বা কোনো বড় জায়গায় স্থান করে দেওয়া হতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রামের সংরক্ষিত আসনে এবার নতুন মুখ আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, মনোনয়ন দৌড়ে বেশ কয়েকজনের নাম আলোচনায় রয়েছে। তারা হলেন- চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সহধর্মিণী হাসিনা মহিউদ্দিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ডিজাইনার সাজেদা সুরাত, প্রয়াত সংসদ সদস্য ডা. আফসারুল আমীনের স্ত্রী ডা. কামরুন্নেছা, প্রয়াত সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের মেয়ে কাজী শারমিন সুমি, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব, সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী দিলোয়ারা ইউসুফ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত, সুচিন্তা ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী, সাবেক চসিক কাউন্সিলর আনজুমান আরা বেগম ও রেখা আলম চৌধুরী প্রমুখ। সংরক্ষিত আসনে এমপি হতে আগ্রহী দিলোয়ারা ইউসুফ যুগান্তরকে বলেন, তিনি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে তার স্বামী কারাবরণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু মহিলা পরিষদ, মহানগর ও উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে তিনি কাজ করেছেন। তৃণমূল থেকে রাজনীতি করছেন। প্রত্যক্ষ ভোটে তিনি চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের মেম্বার নির্বাচিত হয়েছেন।
একইভাবে চট্টগ্রাম দক্ষিণ থেকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সাজেদা সুরাত যুগান্তরকে বলেন, তিনি প্রবাসে লেখাপড়া করলেও দেশে ফিরেছেন। নারী উদ্যোক্তা হিসাবে দেশের নারী সমাজকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে চান। চট্টগ্রামে মহিলা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করা, মহিলাদের ভোট কেন্দ্রে আনা দলের প্রতি তাদের উদ্বুদ্ধ করাসহ বিভিন্ন কাজ করেন। এমপি হিসাবে মনোনীত করলে তিনি আরও বৃহৎ পরিসরে কাজ করতে পারবেন।
অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, তিনি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বীজ বপন করে চলেছেন। ধর্মের নামে যে জঙ্গিবাদী তৎপরতা চলে এর বিরুদ্ধে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করার কাজটি ১৫ বছর ধরে করছেন। মোছলেম উদ্দিন আহমদের মেয়ে কাজী শারমিন সুমি যুগান্তরকে বলেন, তার বাবা পুরোজীবন দলের জন্য উৎসর্গ করেছেন। বাবার কাছ থেকে আওয়ামী লীগের আদর্শ লালন করা শিখেছেন এবং তা ছড়িয়ে দিয়ে বেড়ে উঠছেন।
সূত্র আরও জানায়, আইন অনুযায়ী-জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন করতে হয়। সে হিসাবে আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে এ নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী মাসে তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ১২টিতে নৌকা, তিনটিতে স্বতন্ত্র এবং একটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।