মনোনয়নের পর জটিলতা
পটিয়ায় মুখোমুখি জেলা আ.লীগ সভাপতি ও হুইপ
আবেদ আমিরী, পটিয়া (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামের পটিয়ায় আওয়ামী লীগের গত তিনবারের টানা সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীকে পরিবর্তন করে তার স্থলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে বর্তমান এমপি সামশুল হক চৌধুরী বিদ্রোহী প্রার্থী নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন-এই ইস্যুতে জটিল সমীকরণ তৈরি হয়েছে। আসন্ন নির্বাচন ইস্যুতে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছেন মোতাহেরুল ইসলাম ও সামশুল হক। দুই প্রার্থীকে নিয়ে উপজেলা আ.লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সংগঠনেও বিভাজন দেখা দিয়েছে। এসব কমিটির বেশিরভাগ শীর্ষ নেতাকে নতুন মনোনয়নপ্রাপ্ত দলীয় প্রার্থীর পক্ষে দেখা যায়নি। অপরদিকে তারা নাগরিক কমিটির ব্যানারে এমপি সামশুল হক চৌধুরীকে নির্বাচনের মাঠে নিয়ে আসতে চাইছেন। দুই দিন ধরে দলীয় নেতাকর্মীদের আচরণে সৃষ্টি হয়েছে জটিল সমীকরণ। প্রার্থী পরিবর্তনের ফলে একদিকে নেতাকর্মীদের উল্লাস, অন্যদিকে বিভাজন সাধারণ মানুষের মাঝেও কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ বছরে এমপি সামশুল হক চৌধুরীর সঙ্গে বিরোধের কারণে একটি পক্ষ চরম ক্ষুব্ধ ছিল। মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর তাকে উৎসাহ-উদ্দীপনায়, ঢোল-বাদ্য বাজিয়ে বরণ করেছেন পটিয়াবাসী। তবে এতে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের দেখা যায়নি। অপরদিকে সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর বনানজা কমিউনিটি হলে এসব নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের দেখা গেছে এমপি সামশুল হক চৌধুরীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায়। তবে ওই সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদকে দেখা যায়নি। সোমবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত নেতারা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সামশুল হক চৌধুরীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে এলে সব বিভাজনের অবসান ঘটতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
এ বিষয়ে পটিয়া আসনের এমপি সামশুল হক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতারা তাকে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তাব দিয়েছেন। নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে হলে তাতে অংশ নিতে দলীয় কোনো বাধা নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ২৬ তারিখ যা বলেছিলেন, পরে তার ব্যাখ্যা এসেছে। কেউ বিদ্রোহ করলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি বহিষ্কার। নৌকা ও দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না বলে উল্লেখ করেছেন।’ এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পটিয়া আসনে মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘দলের হাইকমান্ড সেদিন কী বলেছিলেন সেটা পরিষ্কার করেছেন। বাদ পড়া দলীয় মন্ত্রী, এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন না। কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে তা বিদ্রোহ হিসাবে গণ্য হবে। কারও দ্বারা সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের ব্যত্যয় ঘটলে তার বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’