Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

‘আইআইটি হায়দরাবাদে’ উচ্চশিক্ষার সুযোগ

Icon

শিপন হাবীব, হায়দরাবাদ (ভারত) থেকে ফিরে

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

‘আইআইটি হায়দরাবাদে’ উচ্চশিক্ষার সুযোগ

ভারতের আইআইটিগুলো খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে উঠছে। বৃত্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ‘আইআইটি হায়দরাবাদ’ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বছরে ৭ লাখ রুপির বৃত্তি দিচ্ছে। সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ঘুরে মতবিনিময় সভা এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছাড়াও দুজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় যুগান্তরের এই প্রতিবেদকের।

শুক্রবার সকালে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) হায়দরাবাদে পৌঁছতেই বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধিদলকে শুভেচ্ছা জানান জনসংযোগ কর্মকর্তা মিতালী অগ্রবাল। ৬০০ একরের ওপরে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটি ঘুরিয়ে দেখাতে বাস ব্যবহার করা হয়। সবুজে ঘেরা পুরো প্রতিষ্ঠানটিতে বহুতল শিক্ষাভবন, ক্লাসরুম, হোস্টেল, স্টেডিয়াম, সুইমিংপুল, অতিথি ভবন, মাঠ, সংস্কৃতি কেন্দ্রসহ একাধিক গবেষণাগার সরেজমিন দেখানো হয়। ছোট কিংবা বড় প্রতিষ্ঠানটির কোনো ভবনেই এসির ব্যবস্থা নেই। সবকিছুই প্রাকৃতিক আবহ ধরে রাখা হয়েছে। প্লাস্টিক বোতল কিংবা প্লাস্টিক কোনো সামগ্রী প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ। তেলেঙ্গানা রাজ্যের সাঙ্গারেডি জেলায় কান্দি গ্রামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে। চারটি প্রজন্মকে মাথায় রেখে এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হচ্ছে।

দুপুরের দিকে মতবিনিময় সভায় আইআইটি হায়দরাবাদ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন এর পরিচালক অধ্যাপক ড. বি এস মূর্তি। তিনি বলেন, ভারতের আইআইটিগুলোর মধ্যে আইআইটি-হায়দরাবাদ অন্যতম। সারা ভারতে তৃতীয় স্থানে থাকা এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে পড়াশোনা করছেন ৪২০০ শিক্ষার্থী, যার মধ্যে স্নাতক পর্যায়ে ১৭৬০, স্নাতকোত্তর ১২৮০ ও ডক্টরাল শিক্ষার্থী আছেন ১১৬০ জন। ভবনগুলো যে প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা-এসির প্রয়োজন হচ্ছে না।

বিএস মূর্তি আরও বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে পড়তে দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীরা আসছেন। এখানে পড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে জিপিএ ১০-এর মধ্যে ন্যূনতম ৮ থাকতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি-কী করে দুটি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করা যায়। এও বলেছি-শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বাংলাদেশে গড়ে ওঠা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে শিক্ষার্থীরা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসুন। মেধা তালিকার ভিত্তিতে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রকৌশল, প্রযুক্তি, স্থাপত্য, কলা, মনোবিজ্ঞান, সাইবার নিরাপত্তা, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), শিল্প-বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন আধুনিক বিষয়ে গবেষণা ও শিক্ষার সুযোগ রয়েছে এখানে। বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও আইআইটি হায়দরাবাদে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ভারতের প্রতিবেশী দেশ। দুদেশের মধ্যে দারুণ সম্পর্ক। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আগ্রহী হলে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব। মতবিনিময় সভায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ডিন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যাপক তরুণ কান্দি পান্ডা, অধ্যাপক ভারত ভূষণ, অধ্যাপক চন্দ্র শেখর শর্মা ও ডা. শিবা জি উপস্থিত ছিলেন।

বৃত্তি পেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে পড়ছেন বাংলাদেশের চাঁদপুরের আবুল হাসনাত। তিনি জানান, পরিবার নিয়ে হোস্টেলে থাকছেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি সম্পন্ন করে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যখন আইআইটি হায়দরাবাদের বৃত্তির বিজ্ঞপ্তি পান-তখন আইইএলটিএস বা কোনোরকম আলাদা সনদ ছাড়াই শুধু অনলাইনে সাক্ষাৎকার দিয়ে পেয়ে যান ভর্তি ও বৃত্তি। প্রতি মাসে ৬০ হাজার রুপি বৃত্তি ছাড়াও বছরে গবেষণার জন্য পাচ্ছেন আলাদা ১ লাখ রুপি। হাসনাতের মতো বাংলাদেশ থেকে আসা আরেক শিক্ষার্থী উৎপল কুমার ঘোষও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে বৃত্তি নিয়ে পড়ছেন। এখানে প্রকৌশল, প্রযুক্তি ছাড়াও ৩০০-এর বেশি ফ্যাকাল্টিতে পড়ার সুযোগ রয়েছে।

শিক্ষকরা জানান, এখানে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি রয়েছে গবেষণার দারুণ সুযোগ। এখানকার শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর প্রায় ১০০ স্টার্ট আপ দাঁড় করান। আফগানিস্তান থেকে আসা শিক্ষার্থী ওয়ারেস আলি চলতি বছর নতুন এক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। তার উদ্ভাবিত ডিভাইসটি জানিয়ে দেবে অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসাধীন রোগীর পরবর্তী ৫ মিনিটের পালস রেট। এখন এই উদ্ভাবিত প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ চলছে। এ ডিভাইসটির সফলতা চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন আশীর্বাদ হিসাবে দেখা হচ্ছে।

অধ্যাপক তরুণ কান্দি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাজ করবে। নিশ্চয় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য যথাসম্ভব ভালো কিছু করা হবে। ২৫ থেকে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করতে পারবে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম