জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহিদ শেখ কামালের ৭৫তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৯ সালের এই দিনে (৫ আগস্ট) তিনি তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বিপথগামী একদল সেনা কর্মকর্তার নির্মম বুলেটে মাত্র ২৬ বছর বয়সে শাহাদতবরণ করেন তিনি। শেখ কামালের জš§দিন উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার অভিযাত্রায় শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রদর্শিত পথ, আদর্শ, দিকনির্দেশনা হতে পারে আমাদের জন্য অনুকরণীয় মডেল।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী মানুষটি (শেখ কামাল) একই সঙ্গে ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী, ভদ্র, নির্লোভ, নিরহংকারী ও সদালাপী। তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যেতেন অতিসাধারণ হয়ে। তিনি যে কোনো মানুষের প্রয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন।

এদিকে দিনটি পালন উপলক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন ক্রীড়া ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন সকাল আটটায় ধানমন্ডিতে আবাহনী ক্লাব প্রাঙ্গণে শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবে। সকাল নয়টায় বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত শেখ কামালের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন নেতাকর্মীরা। পরে কুরআনখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আলোচনা সভার আয়োজন করবে। এছাড়া বিকাল তিনটায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শ্রমিক লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করবে।

অনন্য প্রতিভার অধিকারী শহিদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ অনার্স পাশ করেন। শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তাছাড়া তিনি ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনেতা হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে সুপরিচিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় বেশ উৎসাহ ছিল তার। শেখ কামাল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশনন্ড লাভ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর এডিসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন এবং শাহাদতবরণের সময় বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এমএ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শহিদ শেখ কামালের ৭৪তম জন্ম বার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালন করার জন্য দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সব স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।