বঙ্গবাজারের আগুনের উত্তাপ সিলেটের ঈদবাজারে
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পোশাক
আবদুর রশিদ রেনু, সিলেট
প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সিলেটের কাপড় ব্যবসায়ীরা ঢাকার যে কটি মার্কেট থেকে ঈদ উপলক্ষ্যে নতুন কাপড় সংগ্রহ করতেন তার অন্যতম ছিল বঙ্গবাজার। স্থানীয় খুচরা কাপড় ব্যবসায়ীদের বড় অংশই বঙ্গবাজার থেকে বিভিন্ন পোশাক সংগ্রহ করেন। বঙ্গবাজারের আগুনের প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে সিলেটের কাপড়ের বাজারে। ঈদ বাজারে বাড়তি দাম দিয়ে কাপড় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
নগরীর কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ঈদের পোশাক বাজারে বঙ্গবাজারের আগুনের প্রভাব রয়েছে। একাধিক ব্যবসায়ী জানান, তাদের অনেকেই পাইকারি কাপড় কিনতে ঢাকায় গিয়ে চাহিদা অনুযায়ী কাপড় পাননি। যা পেয়েছেন তাও বেশি দামে কিনতে হয়েছে।
লালদিঘীরপাড় হকার মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুল মালিক বাবুল বলেন, মার্কেটের অনেকেই বঙ্গবাজার থেকেই কাপড় সংগ্রহ করতেন। পাইকারি পোশাকের বৃহৎ উৎস বঙ্গবাজার মার্কেটটি আগুনে পুড়ে যাওয়ায় সিলেটের ব্যবসায়ীদের অর্ডার করা পণ্য আর পাওয়া যায়নি। এখন তাদের নতুন পাইকারি দোকান খুঁজে কাপড় কিনতে হচ্ছে।
বঙ্গবাজারে আগুনের প্রভাব ঈদের পর আরও বেশি পড়বে বলে মনে করছেন রনী গার্মেন্টের ব্যবসায়ী শিবু রঞ্জন রায়। তিনি বলেন, ঈদের কাপড় অনেকেই ইতোমধ্যে স্টক করে ফেলেছে কিন্তু সমস্যা হবে মূলত ঈদের পর। ব্যবসায়ীদের নতুন করে পাইকারি দোকান খুঁজতে হবে।
নগরীর হাসান মার্কেটের ব্যবসায়ী সিরাজ উদ্দিন বলেন, বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনার পর এরই মধ্যে ঢাকার কয়েকটি মার্কেট সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। বঙ্গবাজারে আগুন লাগার আগের দিন যে কাপড় ১৭০০ টাকা ছিল, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেই কাপড় এখন ২০০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
নগরীর কাকলী শপিং সিটির ব্যবসায়ী অতনু পাল বলেন, ঈদের সময় প্রতি সপ্তাহে বঙ্গবাজার থেকে মার্কেটে পোশাকের চালান আসত। আগুন লাগার পরের সপ্তাহে ঈদের বড় চালান আসার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই আগুন লেগে সব পুড়ে যাওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পোশাক পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। সুনামগঞ্জের কাপড় ব্যবসায়ী সজীব হোসেন বলেন, রমজানে আমরা ঢাকা থেকে দুইবার মালামাল আনি। বেশিরভাগ মালামাল সাধারণত রোজা শুরুর আগেই নিয়ে আসা হয়। শিশুদের কিছু পোশাকের চাহিদা থাকায় সম্প্রতি ঢাকায় গিয়েছিলাম। পোশাকগুলো বঙ্গবাজারের বাইরে থেকে আনলেও দাম বেশি দিতে হয়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, সিলেটের ব্যবসায়ীরা বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগর মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেট থেকে কাপড় সংগ্রহ করে থাকেন। ঈদকে সামনে রেখে কেউ কেউ রোজার প্রথম দিকে একবার এবং মধ্য রমজানের পর আরেকবার কাপড় কিনে আনেন। বঙ্গবাজারে যেহেতু কম খরচে পাইকারি কাপড় মিলে তাই এই মার্কেটগুলো থেকেই অনেকে কাপড় সংগ্রহ করেন।
সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান রিপন বলেন, আগুনে বেশ কিছু মার্কেট পুড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়বে সিলেটের ঈদ বাজারে। অন্য বছরের তুলনায় এবার কাপড়ের দাম এমনিতেই একটু বেশি। তার ওপর বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়ায় ঢাকার অন্যান্য পাইকারি মার্কেট থেকে বেশি দামে কাপড় কিনে আনতে হচ্ছে সিলেটের ব্যবসায়ীদের।