খুলনা ওয়াসা কর্মচারী সমিতির অর্থ তছরুপ!
আহমদ মুসা রঞ্জু, খুলনা
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
খুলনা ওয়াসা কর্মচারী সমবায় সমিতির ২৫ লাখ টাকা তছরুপের অভিযোগে সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন ৩৮ জন সদস্য। এ নিয়ে বাদী-বিবাদীর মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে আয়-ব্যয়ের হিসাব করে লভ্যাংশ সমিতির সাধারণ সদস্যদের মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। চারজন বাদে অন্য সদস্যরা ওই লভ্যাংশ গ্রহণও করেছেন। পরে তারা লভ্যাংশ ঘোষণায় অনিয়মের অভিযোগ করেন। এ নিয়ে সমিতির মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি দেখা দিয়েছে। একপক্ষের দাবি- সমিতির ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বেলাল।
গত বছর ২ নভেম্বর সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লিগ্যাল নোটিশ দেন সমিতির সংক্ষুব্ধ সদস্য সাহাদাত শিকদার। তার আইনজীবী মহসিন মোল্লা লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করেন, ‘৩ আগস্ট-২২ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ৩৮ জন সদস্য স্বাক্ষরিত গণআবেদনপত্র দেওয়া হয়। ওই আবেদনপত্রে সাধারণ সভা আহ্বান, অডিটকরণ ও রিপোর্ট প্রকাশ, লভ্যাংশ ঘোষণা ও প্রদান সংক্রান্ত বিষয়াবলী সাধারণ সদস্যদের জানাতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু গোপনে সদস্যদের লভ্যাংশ দেওয়া হয়। এছাড়া নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সমিতি পরিচালনা করা হচ্ছে।’ সবকিছু সাধারণ সদস্যদের জ্ঞাতসারে করার অনুরোধও নোটিশে করা হয়।
সাধারণ সভা ও আয়-ব্যয়ের অডিট করা হলেও অন্য সদস্যরা আপত্তি তোলেন। বিষয়টি জানার পর ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ পিইঞ্জ উভয় পক্ষকে ডেকে আরেকটি অডিট কমিটি গঠন করে দেন। কমিটিতে সমিতির সদস্য মোবারেক হোসেন, শাহাদাত শিকদার ও মিজানুর রহমানকে রাখা হয়েছে। গঠনের পর চার মাস পার হলেও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি ওই কমিটি।
অভিযোগকারী ও অডিট কমিটির সদস্য সাহাদাত শিকদার বলেন, চার মাসে কমিটির কারও কাছ থেকে আমরা কোনো সহযোগিতা পাইনি। ফলে তদন্ত আর সামনে এগোয়নি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বেলাল হোসেনের বোন পারভীন আক্তার ওয়াসা পরিচালনা বোর্ডের সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর। সেই দাপটে তিনি নিজের মতো করে সমিতি পরিচালনা করছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে সমিতির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন জানান, সমিতির মূলধন ৩৫-৩৬ লাখ টাকার মতো। এর মধ্যে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া রয়েছে। এর বাইরে লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে। ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ভিত্তিহীন। যারা আপত্তি তুলেছেন তারাও তো লভ্যাংশ নিয়ে গেছেন। তাই টাকা আত্মসাতের কোনো প্রশ্নই উঠে না। সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, সমিতির সাবেক সভাপতি মো. দারাশিকো অবসরে যাওয়ার আগে বেশ কিছু টাকার গরমিল রেখে যান। তার কাছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা পাওয়া যাবে। তার অনিয়মকে বৈধ করতে চেষ্টা চালাচ্ছে সাধারণ সম্পাদক বেল্লাল হোসেনসহ কয়েকজন। এ অনিয়মে আমি থাকতে চাই না বলে সমিতির সব ধরনের কাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ওয়াসার এমডি আবদুল্লাহ পিইঞ্জ বলেন, সদস্যদের অভিযোগ পাওয়ার পর নতুন অডিট কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তারা এখনও প্রতিবেদন দেয়নি। তাদের একজন ছুটিতে বলে শুনেছি।