Logo
Logo
×

বাংলার মুখ

ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

কালিয়াকৈরে কৃষকের সর্বনাশ

Icon

মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, গাজীপুর

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

ফাইল ছবি

তিন ফসলি জমি থেকে কাটা হচ্ছে মাটি। সেই মাটি যাচ্ছে ইটের ভাটায়। ২০ থেকে ২৫ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে আশপাশের কৃষিজমিও ভেঙে পড়ছে। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বাংগুরী ও চিনাইল এলাকার ফসলি জমির মালিক ও কৃষকরা। স্থানীয় প্রশাসন তৎপর হলে প্রভাবশালী মাটি ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম বন্ধ করতে পারবে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাংগুরী ও চিনাইল এলাকায় শত শত বিঘা জমিতে এ মৌসুমে ধান ও সরিষার আবাদ করে। এলাকার বেশির ভাগ কৃষক এবং জমির মালিকরা কেউ নিজে কেউবা বর্ঘা দিয়ে ধান ও সরিষা রোপণ করেছে। তবে কিছু জমির মালিকরা নানা কারণে এ বছর চাষাবাদ করতে পারেনি। উপজেলার সাজনধরা এলাকার যুবদলের কর্মী মোজাম্মেল হোসেন, শ্রমিক দলের নেতা লিটন, বান্ধাবাড়ি এলাকার শহিদুল ইসলাম, রজব আলী প্রভাব খাটিয়ে সেই পতিত জমি থেকে গত কিছু দিন ধরে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। জমির কয়েকজন মালিককে কিছু টাকা দিলেও অনেককে না জানিয়েই নির্বিচারে মাটি কাটছে। ভেকু লাগিয়ে অবাধে মাটি কেটে বিক্রি করছে। প্রথম দিকে সন্ধ্যার পর থেকে মাটিকাটা শুরু হতো এখন দিনের বেলা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাটি কাটার পর তা নিয়ে যাওয়া হয় পার্শ্ববর্তী ইটের ভাটায়। এতে কমে যাচ্ছে উর্বর আবাদি জমি। ফলে কমছে খাদ্য উৎপাদন। অন্যদিকে মাটি বহনকারী ড্রাম ট্রাকের দাপটে রাস্তাঘাটেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। চিনাইল এলাকার কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যারা মাটি কাটছে তারা নাকি বিএনপির অনেক বড় নেতা। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোর করেই মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমার চাচার জায়গা থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

শনিবার দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দিনরাত মাটি বাহি ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারণে আশপাশের প্রায় সব রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধুলাবালির কারণে মানুষ চলাচল করতে পারছে না। পার্শ্ববর্তী দেওয়াইর থেকে কুড়ালকাপা সড়কটির বিভিন্ন স্থান ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। স্থানীয় অনেকেই প্রতিবাদ করলে তাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার পাশের মালিকরা ক্ষতির আশঙ্কায় তাদের কাছে মাটি ও জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মাটি ব্যবসায়ীদের দাপটে এলাকায় কেউ কোনো কথা বলতে সাহস পায় না। মাটির গর্তের কাছে একটি ভেকু মেরামত করছেন রফিকুল ইসলাম তার কাছে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি নেতা মোজাম্মেলসহ আরও কয়েকজন এই মাটির ব্যবসা করছেন। মাটি ব্যবসায়ী কালিয়াকৈর উপজেলা যুবদলের কর্মী মোজাম্মেল হোসেন বলেন, মাটি কাটছি না সেখানে একটি পুকুর খনন করছি। পুকুর করে মাছ চাষ করব। ঢালজোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে বিষয়টি জানোর পর আমি তাদের বলে দিয়েছি আর এক ইঞ্চি মাটিও কাটা যাবে না। মাটিকাটা হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। কালিয়াকৈর ইউএনও কাউছার আহাম্মেদ বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করার জন্য। এরপরও কাটা হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম