স্লিপার রক্ষায় বাঁশ!
দেওয়ানগঞ্জে রেলওয়ে গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ শেষ হয়নি চার বছরেও
মদন মোহন ঘোষ, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর)
প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পৌনে দিন কোটি টাকা ব্যয়ে দেওয়ানগঞ্জ মোশারফগঞ্জ স্টেশনের মধ্যবর্তী দিঘলকান্দি ৩১নং রেলওয়ে ৬০ ফুট গার্ডার ব্রিজটির নির্মাণ কাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। নির্মাণাধীন ব্রিজে স্লিপারে কাঠের বিট ব্যবহার না করে বাঁশের পাত লাগানো হয়েছে। তাও শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ব্রিজের ওপর দিয়ে পাঁচ মিনিট থেমে চৌকিদার বইয়ে ট্রেন চালকের স্বাক্ষর নিয়ে ১০ কিলোমিটার গতিতে চলাচলের কারণে ট্রেন যাত্রীদের মূল্যবান জিনিসপত্র ও লাগেজ খোয়া যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে পূর্ব দিকে আড়াই কিলোমিটার দূরে দিঘলকান্দি ৩১নং রেলওয়ে ব্রিজ ২০১৯ সালে ভয়াবহ বন্যায় ওয়াশ আউট হয়ে ভেঙে পড়ে। সে সময় বন্ধ ছিল ঢাকা দেওয়ানগঞ্জ রেল চলাচল।
দেওয়ানগঞ্জ স্টেশন সূত্র জানায়, প্রারম্ভিক স্টেশন দেওয়ানগঞ্জ থেকে গন্তব্যস্থল ঢাকায় আন্তঃনগর তিস্তা ব্রহ্মপুত্র ভাওয়াল এক্সপ্রেস কমিউটার মেইল লোকালসহ সাত জোড়া ট্রেন চলাচল করে।
রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশল কার্য অফিস সূত্রে জানায়, রেলওয়ের ষাটফুট গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকায় কাজ হচ্ছে। সোহাগ সুশান্ত বিজয় নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কাজ করছে। দিঘলকান্দি ভাটিপাড়া স্থানীয় বাসিন্দা বাবু মণ্ডল জানান, এক মাস কাজ করলে তিন মাস বন্ধ থাকে এভাবে কাজ চলছে চার বছর ধরে। ঠিকাদাররা শ্রমিকদের ঠিকমতো খোরাকি বেতন না দেওয়ায় শ্রমিকরা কাজ করতে চায় না। দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলকর্মকর্তাদের তদারকি নেই। পাওনা টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ মিস্ত্রিরা কেসিং মেশিন বিক্রি করে চলে গেছে। ঠিকাদাররা সাইডের মালামাল না আনায় ব্রিজের কাজ হচ্ছে না। ব্রিজের ট্রেন চলাচলের সময় জাম্পিং করে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
মঙ্গলবার সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ব্রিজে ৬ জন শ্রমিক রডের কাজ করছে, ব্রিজের লাইনে স্লিপারে কাঠের বিটের বদলে বাঁশের পাত লাগানো হয়েছে। সেটাও শুকিয়ে ভেঙে গেছে। সাইডে রড ও ওয়েল্ডিং মেশিন না থাকায় শ্রমিকরা হতাশা প্রকাশ করছে। আন্তঃনগর তিস্তা ও কমিউটার চলাচলের সময় ব্রিজ জাম্পিং লক্ষ্য করা গেছে। এখনও ওয়াল ক্যাপ, দুই পাশের ওয়াল, দুই সাইডের ব্লক, মাটিকাটা, ঢালাইয়ের কাজসহ অনেক কাজ বাকি রয়েছে। রেলওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাকে দেখা যায়নি। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিলে এই ব্রিজের বারবার সময় বাড়ানোর নামে কালক্ষেপণ করে টাকা লুটপাট করছে।
ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী কাযী রেজাউল হক যুগান্তরকে বলেন, ব্রিজের রিভিও মিটারগেজ না ব্রডগেজ এ বিষয়ে টানাটানি করায় কাজে দেরি হয়েছে।