৫২ তে শ্রীলেখা, হটপ্যান্ট পরায় কটাক্ষের শিকার
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ পিএম
আরজি করকাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় শহর কলকাতাজুড়ে। প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়ছে বৃহত্তর বাংলায়। নির্যাতিত তরুণীর জন্য বিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন শ্রীলেখা মিত্র। তবে দুদিন আগে চুপিসারে শহর ছেড়েছেন এ অভিনেত্রী।
গত ৩০ আগস্ট শুক্রবার ছিল অভিনেত্রীর জন্মদিন। জন্মদিনটা নিরিবিলি কাটাতে উত্তরবঙ্গ সফরে যান টালিউড অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। পাহাড়ের কোলে হটপ্যান্টে পোজ দিতেই ধেয়ে এলো কুরুচিকর মন্তব্য।
জীবনের এই বিশেষ দিনটা একান্তে কাটাতেই পাহাড়ের কোলে উড়ে যান শ্রীলেখা। নর্থ বেঙ্গলকে খানিকটা মি-টাইম কাটালেন অভিনেত্রী। এমনিতে অভিনেত্রীরা নিজেদের বয়স ফাঁস করার পক্ষপাতী নন। কিন্তু বরাবরই উলটো পথের পথিক শ্রীলেখা। নিজের বয়স নিয়ে রাখঢাক পছন্দ নয় তার। কারণ বয়স তার কাছে শুধুই একটা সংখ্যা।
৫২তে পা দিলেন শ্রীলেখা। ১৯৭২-এর ৩০ আগস্ট জন্ম অভিনেত্রীর। এজ শেমিংয়ের পরোয়া করেন না অভিনেত্রী। মনের দিক থেকে অবশ্য আজও অভিনেত্রীর বয়স ২৫! এ বছরের জন্মদিনটা শহরের কোলাহল থেকে দূরে কাটালেন তিনি। অভিনেত্রী বলেন, এই বছরের জন্মদিনে আমার নিজেকে দেওয়া উপহার এই ট্রিপ!’
হিমালয়ের কোলে নিরিবিলিতে কিছু অচেনা মানুষের সঙ্গেই কাটালেন জন্মদিনের মুহূর্ত। এরপর ডেনিম হটপ্যান্ট আর কালো টি-শার্ট পরে চললেন পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তায়। উত্তরবঙ্গের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের ঝলক উঠে এসেছে শ্রীলেখার পোস্টে। সামাজিকমাধ্যমের একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন— এই দুদিনেই মায়ায় জড়ালাম যাদের সাথে ...পথিক আমি, পথ চলাতেই আনন্দ’। তবে এই আনন্দের মুহূর্ত দেখেও নেটপাড়ার একাংশ কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। একজন লিখেছেন— ‘আপনার সব প্রতিবাদ শেষ?’ আরেকজন লেখেন— ‘মদ খেতে মাতাল হয়ে ফটোশুট করছে ম্যাডাম…’।
ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নন শ্রীলেখা। নিন্দকদের কড়া জবাব দিতে জানেন তিনি।পালটা অভিনেত্রী লিখেছেন— তুমিও একজন রেপিস্ট মনে হচ্ছে ভাই, যে মেয়েদের এরকম কথা বলার সাহস পেলে? তোমার মতো পুরুষ মানুষ আছে বলেই মেয়েরা ভিকটিমাইজড হয়। শুধরে যা বাছা কোনো দিদি বাঁচাবে না।
শ্রীলেখা মিত্র এর আগে মালায়ালাম পরিচালকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেছিলেন। যৌন হেনস্তার এ অভিযোগ আনতেই সেই রাজ্যের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী সাজি চেরিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন পরিচালক রঞ্জিত। সেখানে পরিচালক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
আনন্দবাজার অনলাইন সূত্রে জানা গেছে, শ্রীলেখা মিত্রের অনুমতি ছাড়া তার শরীর স্পর্শ করেছিলেন মালায়ালাম পরিচালক ও কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমির প্রধান রঞ্জিত। গত শনিবার এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আনেন এ অভিনেত্রী। তার জেরে এবার ‘কেরালা চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমি’র প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন এ পরিচালক।
ঘটনার সূত্রপাত, ২০০৯ সালের ‘পালেরি মনিক্যম: ওরু পাথিরাকোলাপাথাকাথিনতে কথা’-এর অডিশনের সময়ে তাকে যৌন হেনস্তা করেছিলেন পরিচালক রঞ্জিত। শ্রীলেখা বলেন, আমি এক সিনেমাটোগ্রাফারের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম। রঞ্জিত হঠাৎই আমাকে ডেকে নিয়ে যান ওর শোবারঘরের দিকে নিয়ে যান, ছবির গল্প বলার জন্য। আমি ভাবলাম, ভিড় এড়ানোর জন্য তিনি ডেকেছেন। ঘরটি বেশ অন্ধকার ছিল। আমি ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলাম। হঠাৎ আমার হাতের চুড়িগুলো নিয়ে খেলতে লাগলেন পরিচালক। আমরা নারীরা পুরুষের স্পর্শের অর্থ বুঝি। আমার অস্বস্তি হচ্ছিল। কারণ আমার তার সঙ্গে তেমন কোনো বন্ধুত্বও ছিল না। কিন্তু আমি নিশ্চিত হতে পারছিলাম না। তার পর তিনি আমার ঘাড়ে ও চুলে হাত দিতে শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে আমি সেই ঘর থেকে বেরিয়ে যাই।
শ্রীলেখার এ অভিযোগকে অবশ্য অসত্য বলেই দাবি করেন রঞ্জিত। তিনি বলেন, ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ না পেয়েই যৌন হেনস্তার অভিযোগ করছেন শ্রীলেখা।
তবে অভিনেত্রীর এ অভিযোগের ২৪ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই পদত্যাগ করেছেন রঞ্জিত। শুধু তিনি নন, ওই একই দিনে ‘কেরালা চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমি’র সহসম্পাদক অভিনেতা সিদ্দিকও ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সিদ্দিকের বিরুদ্ধেও যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনেন অভিনেত্রী রেবতী সম্পত।