Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

‘তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে মোর প্রাণে’

Icon

ড. হাসনান আহমেদ

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

‘তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে মোর প্রাণে’

নিন্দুকেরা প্রায়ই আমাকে একহাত দেখিয়ে ছাড়েন। বলেন, আমি সুযোগ পেলেই নাকি রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে দু’কলম ঠুকে বসি। কথাটা অমূলক নয়। এছাড়া যে আমার আর কোনো গত্যন্তর নেই, তা বোঝাব কেমনে। কেন জানি সুদীর্ঘ বছর পেরিয়ে বেলাশেষে এসে এ ধারণা আমার মাথায় ঢুকেছে যে, একটা দেশের উন্নতি ও অবনতির মূলে থাকেন রাজনীতিকরা। এখানে যদি দুর্নীতিবাজ, ভাঁওতাবাজ, ফন্দিবাজ ব্যবসায়ী, ফেরেববাজ এসে আস্তানা গাড়ে, তাহলে দেশটার বিচ্ছিরি-বিতিকিচ্ছি দশা হওয়া অবশ্যম্ভাবী নয় কি? এ রাজনীতিকদের কারণেই দেশটা রসাতলে যেতে বসেছে। কারণ তারাই তো একজোট হয়ে দেশ পরিচালনা করেন। সে বিবেচনায় এদেশের সব অনিষ্টের মূল এই বিকৃত রাজনীতি, রাজনীতির নামে দেশ শোষণ-লুটপাট, তা সে যে দলেরই হোক না কেন। সেই স্বাধীনতার পর থেকে কখনো দলগতভাবে, আবার কখনো জোটবদ্ধভাবে অধিকাংশ দলই ক্ষমতায় থেকেছে। তাদের কর্মকাণ্ড আমরা দেখেছি, এখনো দেখছি। দেখতে দেখতে আমাদের বদ্ধমূল ধারণা জন্মেছে, ‘বিকৃত রাজনীতি’ ও মতলববাজি এদেশের মূল রোগ। এই চাঁচাছোলা কথা যাদের বিরুদ্ধেই যাক না কেন, এ রোগের চিকিৎসা না হওয়া পর্যন্ত দেশ গড়ে তোলা অসম্ভব।

আসলে রাজনীতি একটা বিমূর্ত ধারণা। এটা আবার খারাপ হয় কী করে? খারাপের দায়টা এসে রাজনীতিকদের ওপরেই পড়ে। রাজনীতিকরা চিন্তাধারায় উন্নত হলেই দেশের উন্নতি হতে বাধ্য। রাজনীতিকদের চরিত্র (প্রকৃতি, স্বভাব) খারাপ, তাদের উদ্দেশ্য খারাপ, তাই রাজনীতি খারাপ। মাঝখান থেকে ভুগতে হচ্ছে দেশকে, দেশের সাধারণ মানুষকে। আমার মতো এক-পা কবরে থাকা মানুষের তো আশায় আশায় জীবনটা পার হয়ে গেলে। এখন বেলাশেষের ভাবনা ভাবতে গিয়ে হতাশা ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই। ভাষাও অনেক কর্কশ হয়ে গেছে। এর সঙ্গে হিউম্যান সাইকোলজি জড়িত। এ নিয়ে অনেকেই আমার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। আমাকে হতাশাবাদী বলেন। কিন্তু আমি আর কতদিন আশায় আশায় দিন পার করব? তাদের আমি মনে মনে দলকানা বা বিবেকহীন বলি, যদিও কথাটা সামনে বলি না। মানুষের মনুষ্যত্ব ও কর্মকে বিবেচনা না করে অন্ধ দলীয়-সমর্থক হওয়া কোনো রাজনীতিসচেতন শিক্ষিত লোকের শোভা পায় না। এমনটি হলে তাকে শিক্ষিতও বলা যায় না। যে সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলতে জানে না, তাকে শিক্ষিতইবা বলি কী করে? কেউ বলেন, অমুক দল খারাপ, তাই দেশের উন্নতি হচ্ছে না, অন্য দল ক্ষমতায় এলে ঠিকই ভালো কিছু হতো। এ ধরনের কথায় আস্থা রাখতে পারি না, বিশ্বাসও করি না। আমি দেখি সব দলের রাজনীতির মাথা থেকে পা পর্যন্ত পচে গেছে, সেখান থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। যে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, আইন প্রয়োগের দ্বৈত-মান ও জিঘাংসার আগুন রাজনীতিকরা এদেশের মানুষের মনে জ্বেলে দিয়েছেন ও এখনো দিচ্ছেন, এর পরিণতি আমরা সবাই বুঝতে পারছি। এ পচনের রেশ সমাজের পরতে পরতে ছড়িয়ে গেছে। সাধারণ মানুষকে পর্যন্ত আক্রান্ত করে ছেড়েছে। রবিঠাকুরের কথায়, ‘তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে মোর প্রাণে, সে আগুন ছড়িয়ে গেল, সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে।’ তা দেশ ভালো চলবে কী করে? একটা ভালো আলুকে পচানো সম্ভব; পচা আলুকে পূর্বাবস্থায় আনা কি সম্ভব? আলুটাকে মাটিচাপা দিতেই হবে। নইলে গন্ধ ছড়াবে। এর কোনো বিকল্প নেই। পচা আলুর যে কী দুর্গন্ধ, কখনো ঘ্রাণ নিয়ে দেখেছেন কি? যতই আতর-থেরাপি প্রয়োগ করুন, গন্ধ দূর হবে না। আমি প্রকৃতির নিয়ম থেকে কথাগুলো বলছি। এই পচা রাজনীতি আমার মতো কোটি কোটি মানুষের নিষ্কলুষ জীবনের ভবিষ্যৎ, লালিত স্বপ্ন ধ্বংস করে দিয়েছে, তাই আমি এসব কথা বলতে বাধ্য। শ্রেণিকক্ষে ছাত্রছাত্রীদের অনেক কথার উত্তর দিতে পারি না। মাথাটা হেঁট হয়ে যায়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে (আমার ছাত্রছাত্রীদের) কোন নরকে রেখে মরতে চলেছি, সে কথা ভাবলে গা শিউরে ওঠে। আমার এসব ক্ষোভের কথা ছাপাতে সংশ্লিষ্ট সম্পাদকের অনেক ভাবতে হয় জানি। কিন্তু এসব কথা না লিখতে পারলে আমি যে অসহায় হয়ে উঠি, রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটাতে হয়। আমরা কি দলবাজি করব, না উচিত কথা বলব? এর বিকল্প আমি আর তো কিছু খুঁজে পাই না।

রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারতাম। তা সম্ভব নয়। যা দেখছি, সুবিধা না দিতে পারলে ত্যাগের মহিমায় উদ্দীপ্ত হয়ে দেশ গড়ার কাজে এদেশে কেউ আমার রাজনৈতিক দলে যোগ দেবে বলে মনে হয় না। এ কথা ভাবলে বড় বড় নেতারা সাগরেদদের সুবিধা দিতে বাধ্য হচ্ছেন কেন, তা বুঝে আসে। মূলত জনগোষ্ঠী জনসম্পদ না হয়ে জন-আপদে পরিণত হয়ে গেছে। আমরাই তাদের জন-আপদ বানিয়েছি। এ কথা অনেকবার যুক্তি দিয়ে এ কলামে লিখেছিও। এ কথা বুঝতে পেরেই হয়তো কেউ নতুন দল গঠন ঘোষণা করার পরও মনোভাব প্রত্যাহার করে নিয়েছে। হাঁড়ি চাটতে না দিলে দলে লোক পাওয়া দুষ্কর। দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত, নৈতিকতাবোধ-সম্পন্ন জনমানুষের সংখ্যা এদেশে অতিঅল্প। তারা কোটরের প্যাঁচার মতো অতিসন্তর্পণে দিনযাপন করছেন; বিড়ালের মতো নিঃশব্দে পা ফেলে চলছেন। দুর্নীতিবাজ ও ক্ষমতাধরদের সীমাহীন দাপটে তারা দেশের উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না। এর মধ্যে আবার উদয়াস্ত গতর খেটে জীবনযাপন করে, কারও সাতে-পাঁচে থাকতে চায় না, এমন নিরীহ জনগোষ্ঠী রাজনীতিতে আসবে এমনটিও ভাবা উচিত নয়। এদের ‘অন্নচিন্তা চমৎকার’। তাদের সবসময় গণনা থেকে বাদ রাখি। এরা নিজে ভোগে, অন্যকে ভোগায় না। একমাত্র সুশিক্ষা এদেশকে রক্ষা করতে পারে। শিক্ষার মানেরও শীর্ণদশা, ক্ষীয়মান; তা নিয়েও রাজনীতি ও ব্যবসা। এ নিয়েও দেশি-বিদেশি চক্রান্ত। মাথা ন্যাড়া হলে মাথা চাটা সহজ হয়।

বর্তমানে কয়েকটা সংবাদ ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ বলা যায়। এর মধ্যে দুই-তিনটাকে প্রাসঙ্গিক হিসাবে টেনে আনি। আগেই এমপি আনার, ‘যার জনসমর্থন দেখে সরকার তিনবার এমপি মনোনয়ন দিয়েছে’, সে কথায় আসি। তার হত্যা নিঃসন্দেহে মর্মন্তুদ, বীভৎস ও করুণ। পাষাণ হৃদয়ও এমন ঘটনা শুনলে ব্যথিত হয়। বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক মিডিয়া তাকে নিয়ে অনেক রকম কথা লিখে চলেছে। অনেক পত্রিকায় স্বর্ণ চোরাচালানি, মাদক চোরাকারবারি, নারী পাচারকারী, কালোবাজারি, রাতচরা-বাহিনীর গডফাদার ইত্যাদি বিভিন্ন কাজের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন বলে খবর বেরোচ্ছে। তার নামে এর আগে অনেক খারাপ মামলাও নাকি ছিল। এমনভাবে কথা বলা হচ্ছে যে, না বিশ্বাস করে পারা যাচ্ছে না। যদিও চলতি সমাজব্যবস্থায় নিজের কান ও চোখ ছাড়া কোনো কিছুকে বিশ্বাস করা কঠিন। এখানে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্ন নয়। প্রশ্ন হলো, তিনি এত খারাপ লোকই যদি হবেন, কেন তিনি পরপর তিনবার এমপি নির্বাচিত হলেন? কারা তাকে মনোনয়ন দিল? তিনি জাতীয় পর্যায়ের নেতা ছিলেন না জানি। এর আগে কোনোদিন তার নামও শুনিনি। মনোনয়ন দেওয়ার আগে কি সরকারের কোনো বিশ্বস্ত বিভাগের মাধ্যমে খবরও নেওয়া হয়নি? সেখানকার রিপোর্ট কী বলে? একজন মরার পরই সব তথ্য প্রকাশ পায়, আগে তথ্য আসে না কেন? এলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না কেন? নাকি রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন অঞ্চলের দাগি আসামিদেরই বেছে বেছে মনোনয়ন দেয়? নাকি পেশিশক্তিধারী দাগি আসামি ছাড়া রাজনীতিতে ইদানীং ভালো কোনো লোক নাম লেখাতে চাচ্ছেন না? নাকি দাগি লোক ছাড়া বর্তমান রাজনীতিতে সুবিধা করা যায় না? এসব কথা আমি শুধু ক্ষমতাসীন দলকেই বলছি না।

এমপি আনার নাকি প্রথমে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে বাতাস বুঝে বিএনপিতে যোগ দেন। এলাকার জনপ্রতিনিধিও ছিলেন। রাজনীতির অঙ্গনে মাশাআল্লাহ পদের অভাব নেই। পরে অনুকূল বাতাসে আওয়ামী রাজনীতিতে যোগ দেন, জীবনে সর্বোচ্চ সার্থকতা আসে। তাই আমি তো শুধু একটা দলকেই এজন্য দায়ী করতে পারি না। এটাই কি এদেশের রাজনীতির প্রকৃত অবস্থা নয়? কালবোশেখি মেঘ ও ঝড়ের কাছে কি চাঁদের স্নিগ্ধ আলো-ঝলমলে রাত আশা করা যায়? দুর্মুখেরা বলেন, বর্তমান রাজনীতিতে নাকি দুর্নীতিবাজ, মতলববাজ লোক বাছতে গেলে রাজনীতির কম্বল উজাড় হয়ে যাবে। কথাটা দেখাদৃষ্টে সত্য। আরও সত্য আছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে দেখছি। খুলনা অঞ্চল থেকে রাজশাহীর বাগমারা পর্যন্ত বর্ডার-বেল্ট যত রাতচরা বাহিনীর বিচরণক্ষেত্র। কত গডফাদার ও তার সাগরেদ যে জন্মাল ও কালের আবর্তে বিলীন হয়ে গেল, এর কোনো ইয়ত্তা নেই। সবই এ দু-চোখ দিয়ে দেখলাম। একটা নিদেন বুঝ এ থেকে জন্মেছে যে, অন্ধগলিতে ঢোকা সহজ, সেখান থেকে ফেরার পথ বন্ধ। জীবন থেকে নেওয়া আরেকটা অভিজ্ঞতা জন্মেছে যে, সাপের খেলোয়াড় ও ওঝা যত কৌশলীই হোক, সাপের ছোবলে তার মরণ। এ অভিজ্ঞতা পুরো রাজনীতির ক্ষেত্রেও কার্যকর। কথা হচ্ছে, সন্ত্রাসী, নীতিহীন, অতিকৌশলী খেলোয়াড়রা এদেশের রাজনীতিকে গ্রাস করবে কেন? রাজনীতির মাঠইবা তাদের অভয়ারণ্য হবে কেন?

কলুষিত রাজনীতির এ অভয়ারণ্য তো দেশের প্রতিটি পেশা, পেশাদারত্ব, সরকারের প্রতিটি বিভাগ ও সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়েছে ও এখনো দিচ্ছে। ওদের এখন ‘ফুলের বনে যার পাশে যায় তাকেই লাগে ভালো’ অবস্থা। আমার বিবেক তো বলতে পারে না-অমুকের রাজনীতি ভালো, তমুকের রাজনীতি খারাপ। আমি তো দেখি, এদেশে ‘সব শেয়ালেরই এক রা’। পরশপাথরের সংস্পর্শে যে কোনো পদার্থ সোনায় পরিণত হয়। এদেশের রাজনীতির স্পর্শে প্রতিটি পেশা ও সেক্টরে কর্মরত মানুষ দুর্নীতিবাজ, ঘুসখোর, হাঁড়িচাটায় পরিণত হয়েছে। যারা নিজেদের এখনো কলুষমুক্ত রাখতে পেরেছেন, তারাই দেশের সম্পদ, তাদের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথানত হয়ে আসে; যদিও সংখ্যায় তারা নগণ্য। পুলিশ বাহিনী ও দেশরক্ষা বাহিনীর বড় কর্মকর্তাদের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ ও শত শত কোটি টাকা বানানো নিয়ে যে প্রচার সংবাদপত্রে পড়ছি, এগুলো তো বলা-কথার প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। প্রতিদিনের পত্রিকা এমনই হাজার হাজার অপকর্ম, অপ-কর্মী, দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, টাকা পাচার ও দেশ ধ্বংসের বার্তা নিয়ে সামনে হাজির হচ্ছে। কোনটা রেখে কোনটা পড়ব! কোনো কোনো রাজনীতিক সব কিছুকে তুড়ি মেরে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেটা সবাই বোঝে। কিন্তু এই যে হাজার হাজার পতনমুখী ঘটনা, এত কিছুকে ধামাচাপা দিতে গেলে অত বড় ধামা ওরা পাবেটা কোথায়? সেজন্য আমরা অগত্যা ‘নিম্নস্বরে মুখচাপা’ এবং ‘পত্রিকায় কলম-চাপা’ দিয়ে শেষ রক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সে চেষ্টাইবা কতটুকু সার্থক হবে!

স্বাধীনতার ঘোষণায় যে উদ্দেশ্যের কথা আমরা প্রচার করেছিলাম, সে উদ্দেশ্য কি এখনো বলবত আছে? থাকলে সে উদ্দেশ্য সাধনের বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করা জরুরি। কীভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে তার বিস্তৃত রূপরেখা আমাদের জানা প্রয়োজন। রাজনীতিকদের কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা অতি প্রয়োজনীয়। সেই সঙ্গে তাদের ‘কোড অব এথিক্স’ও নির্ধারণ করা সময়ের দাবি। নইলে আমার ছোটবেলায় শোনা জারিগানের অবস্থা হতে বাধ্য। ‘গুরু গুরু বলে ডাকি গুরু রসের গোলা-আ, ওরে এমন দোয়া দিলে গুরু তুমি কাঁধে দিলে ঝোলা।’

ড. হাসনান আহমেদ : অধ্যাপক, ইউআইইউ; সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ; প্রেসিডেন্ট, জাতীয় শিক্ষা-সেবা পরিষদ

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম