Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

এ আন্দোলন যৌক্তিক ও নজিরবিহীন

Icon

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এ আন্দোলন যৌক্তিক ও নজিরবিহীন

চলমান ইসরাইল-ফিলিস্তিন-ইরান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ-সংঘাতের ভয়াবহতা নিয়ে পুরো বিশ্ব আতঙ্কিত। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন এবং ইউরোপের কতিপয় দেশের যুদ্ধংদেহী মনোভাব দেশগুলোর পারস্পরিক সম্পর্কে ফাটল তৈরি করছে। এর প্রভাব পড়ছে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোয়ও। যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহার বৈশ্বিক পরিবেশকে করে তুলছে দুর্বিষহ। অন্যদিকে খাদ্য, জ্বালানি-গ্যাস প্রভৃতির চাহিদা ও সরবরাহব্যবস্থায় শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। ফলে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। মানবাধিকার নিয়ে উচ্চকণ্ঠ যে দেশগুলো, তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্রও স্পষ্ট। তবে সচেতন জনগণ অত্যন্ত সরব। প্রতিবাদী আন্দোলন-সংগ্রামে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনে গত সাত মাসে প্রায় ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, অক্টোবরে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনের ৮০ শতাংশ স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ২৬১ জন শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫ জন অধ্যাপকসহ প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ গণহত্যায় নারী-শিশু-কিশোর কেউ বাদ পড়েনি। ইসরাইলি সেনাদের বেপরোয়া তাণ্ডবে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে বাসযোগ্য ভবনগুলো। সব মিলিয়ে এক কঠিন মানবেতর জীবনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের। তারপরও দানবতুল্য মানুষদের বিবেক কোনোভাবেই এতে নড়ে উঠছে না।

ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ করছে। দেশটির প্রায় সব অঙ্গরাজ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ইতোমধ্যে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেও আন্দোলনকে ব্যাহত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের গণহারে বহিষ্কার, আবাসিক সুবিধা কেড়ে নেওয়া, স্কলারশিপ বাতিল, ফৌজদারি ধারায় মামলার ঝুঁকিসহ বিভিন্ন পুলিশি নির্যাতনের ভয়াবহ প্রেক্ষাপটেও শিক্ষার্থীদের দমনে যুক্তরাষ্ট্র সরকার হিমশিম খাচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর হিসাবে বর্তমানে প্রায় ১৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে এ আন্দোলন চলমান রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিপুলসংখ্যক খ্যাতিমান অধ্যাপক ও অ্যালামনাই এ আন্দোলনে প্রত্যক্ষ সমর্থন জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা যেসব দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন তা হলো-ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধ থেকে লাভবান হচ্ছে এমন করপোরেশনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা বিনিয়োগ করছে, তাদের তথ্য এবং অন্যান্য আর্থিক বিষয়ে স্বচ্ছতা, ইসরাইলি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রোগ্রামগুলোর সঙ্গে একাডেমিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, ইসরাইলের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা ও ইসরাইলে বিনিয়োগ বন্ধ করা ইত্যাদি।

শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্বতঃস্ফূর্ত এ আন্দোলনকে শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দমনের অপচেষ্টা চালায়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ তাদের তাঁবু কেড়ে নেয়। শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে অনেক ক্ষেত্রে বিক্ষোভ বন্ধে নির্মম আচরণ করা হয়। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে চলমান আন্দোলন থেকে বিক্ষোভকারীদের ধরপাকড় করছে পুলিশ। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই সার্বক্ষণিক বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি লক্ষণীয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি বর্বরতার চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। আন্দোলনরত শত শত শিক্ষার্থীর মধ্যে ঢুকে সংঘর্ষে জড়ানো, টেনেহিঁচড়ে শিক্ষার্থীদের গণহারে গ্রেফতার, নারী অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে হাতকড়া পরানোসহ মার্কিন পুলিশের নানামুখী কদর্য কমযজ্ঞে পুরো বিশ্ব স্তম্ভিত। বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, এমরি ইউনিভার্সিটি, টেক্সাস ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া, নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, রচেস্টার, এমআইটি, প্রিন্সটন, হার্ভার্ডসহ আন্দোলনে লিপ্ত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই পুলিশ কমবেশি সংঘর্ষে জড়িয়েছে। বিক্ষোভকারীদের আটক করেছে। অভিযানে আটক হয়েছেন ডেমোক্রেট রাজনীতিবিদ ও গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিল স্টেইন।

ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে রাস্তায় ইসরাইলপন্থি কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় হয়েছে। ইসরাইলের পতাকা হাতে তারা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে স্লোগান দিচ্ছে। ১ মে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় তারা। মুখোশ পরা একদল ইসরাইল সমর্থক ফিলিস্তিনপন্থিদের লাঠিপেটা করে। ফলে ক্রমেই দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। ৫ মে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয় ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তৈরি মার্কিন বার্তা সংস্থার পরিসংখ্যান মতে, ১৮ এপ্রিল শুরু হওয়া এ বিক্ষোভকে ঘিরে অন্তত ৬১টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ৪৭টি ক্যাম্পাস থেকে ২ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী তাঁবু ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ সময় তাদের ওপর রাসায়নিক উপকরণ সমৃদ্ধ স্প্রে ছিটানো হয়। বিশ্লেষকদের দাবি, আগামী দিনগুলোয় সহিংসতা আরও বাড়তে পারে।

বিজ্ঞজনের মতে, মতপ্রকাশের অধিকারের দাবিতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ প্রদর্শনে সর্বদা সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পুলিশি অভিযান ও ধরপাকড় দেশটির সংবিধান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা ও ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। মার্কিন সরকারের এমন কর্মকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। দেশটির মানবাধিকার নিয়েও প্রশ্নের উদ্রেক হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় চলা এ আন্দোলন দমনের কড়া সমালোচনা করেছেন। সম্প্রতি দলের কার্যনিবাহী কমিটির বৈঠকের আগে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘আন্দোলনের সময় একজন মহিলা প্রফেসর বলছেন, আমি ভার্সিটির প্রফেসর। পুলিশ তাকে ধরে হাতমোড়া দিয়ে মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে চেপে অ্যারেস্ট করেছে! সেখানে ছাত্র-শিক্ষক, তাদের হাতে লাঠি ছিল না, আগুনও ছিল না। তারা কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধে মারমুখীও ছিল না। তারপরও আমেরিকার পুলিশ যে আক্রমণ করেছে, এতে সেই দেশে মানবাধিকার যে কতটুকু আছে সেটি প্রশ্ন, কথা বলার স্বাধীনতা কতটুকু আছে সেটি প্রশ্ন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার অধিকার কতটুকু আছে সেটি আমাদের প্রশ্ন।’

যুক্তরাষ্ট্রের অতি মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিপুলসংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান দেশটির নীতিনির্ধারকদের অস্বস্তিতে ফেলেছে। মার্কিন সরকার শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনকে ‘ইহুদিবিরোধী আন্দোলন’ তকমা দিয়ে প্রতিরোধ করছে। মার্কিন প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে জানায়, আন্দোলনকারীরা অ্যান্টি-সেমিটিজম বা ইহুদিবিদ্বেষ ছড়াচ্ছে এবং তাদের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ইহুদি নাগরিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদি শিক্ষার্থীরা হুমকির মুখে পড়ছে। একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় শিক্ষার্থীদের পা না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। গণমাধ্যমসহ রাষ্ট্রীয় ও সরকারের সব বিভাগ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ‘হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল’, ‘ইহুদিবিদ্বেষী’, ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে চিহ্নিত করে ইসরাইলপন্থি সংগঠন ও কমিউনিটিকে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তুলছে। কিন্তু বিবিসি, টেলিগ্রাফ, আলজাজিরাসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ মুসলিম হলেও সব ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর উল্লেখযোগসংখ্যক প্রতিনিধি এতে অংশগ্রহণ করছেন। এমনকি অনেক ইহুদি শিক্ষার্থীও সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

আন্দোলনকারীরা ‘ইহুদিবিরোধী আন্দোলন’ এমন দাবি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলেছেন, আমরা গণহত্যাবিরোধী, ইহুদিবিরোধী নই। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনায় এটি স্পষ্ট যে, কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে ‘গাজা সলিডারিটি এনক্যাম্পেন্ট’ নামে শিক্ষার্থীদের একটি জোট এবং নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে ‘এনওয়াইইউ প্যালেস্টাইন সলিডারিটি কোয়ালিশন’ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ‘গাজা সলিডারিটি এনক্যাম্পমেন্ট’ জোটে আছে ‘কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপার্টথেইড ডাইভেস্ট’ (সিইউএডি), ‘স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন’ এবং ‘ইহুদি ভয়েস ফর পিস’ নামে তিনটি ছাত্রসংগঠন। অন্যদিকে ‘এনওয়াইইউ প্যালেস্টাইন সলিডারিটি কোয়ালিশন’ জোট গঠিত হয়েছে ‘স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন’, ‘ফ্যাকাল্টি ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন’, ‘ল স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন’, ‘শাট ইট ডাউন এনওয়াইইউ’, ‘জিউস অ্যাগেইনস্ট জায়ানিজম’সহ ২০টির অধিক ছাত্রসংগঠন নিয়ে।

গাজায় হামলা বন্ধের দাবিতে শুরু হওয়া শিক্ষার্থী বিক্ষোভ বিভিন্ন দেশে বিস্তৃত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পর আরও ১২টি দেশে একই দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ও সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার ম্যাকগিল ও কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ফ্রান্সের প্যারিস ইনস্টিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিস ও সরবন বিশ্ববিদ্যালয়, ইতালির স্যাপিনজা বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্যের লিড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, ওয়ারউইক ইউনিভার্সিটিসহ আরও কয়েকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, আয়রল্যান্ড ও মেক্সিকোতে। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে এটি প্রমাণিত যে, বিশ্বের সব বিবেকবান মানুষ ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। নির্দোষ ও নিরীহ মানুষের প্রতি এমন নির্মমতা কখনো গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আন্দোলনরত সব পক্ষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর একযোগে অচিরেই বিশ্বকে আলোড়িত করবে। বিশেষ করে ইসরাইলের সমর্থক মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে এ যৌক্তিক আন্দোলনের গতিবেগ আরও জোরদার হলে যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়ার অবকাশ নেই।

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী : শিক্ষাবিদ; সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম