বাঘায় আ.লীগ নেতা হত্যা
বিচার চেয়ে ছেলের আবেগঘন স্ট্যাটাস
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল হত্যার এক সপ্তাহ পর ছেলে আশিক জাবেদ নিজের ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। বুধবার রাতে বাবার ছবিসহ ওই স্ট্যাটাসে অনেকেই নিজস্ব মতপ্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশিক জাবেদ স্ট্যাটাসে লিখেছেন, একই ছাদের নিচে দুই যুগের বেশি সময় একসঙ্গে অবস্থান করা মানুষটি আজ নেই। যার হাত ধরে পথ চলতে শেখা, হামাগুড়ি থেকে দৌড়ানো, তারপর তার ছায়াতলে বেড়ে ওঠা, সেই মানুষটি আজ অতীত। প্রতি মুহূর্তে অপলক দৃষ্টি সবখানে সবদিকে খুঁজে ফিরছে সেই প্রিয় মুখ, ব্যাকুল প্রাণে শুনতে সাধ জাগছে সেই কণ্ঠস্বর, কোথায় পাব হারানো সে ধন?
তদন্তের আশ্বাস দিচ্ছে কেউ, কেউ সঠিক খুনি খুঁজছে আবার কারও কারও কাছে ঘটনাটি শুধুই বিচ্ছিন্ন ঘটনামাত্র। আক্কাস মেরাজ আর তার সঙ্গে থাকা জানোয়ারগুলোই খুনি খুনি খুনি আর কীভাবে? আর কত জোরে? আর কার কাছে গিয়ে চিৎকার করে বললে আপনারা শুনতে পাবেন এই সহজ কথাটি। হারানোর ব্যথা অন্য কেউ বোঝে না, কথার কৌশল আর অপরাধীদের শক্ত খুঁটিই কি তাহলে এই বিচারের বাধা? এরপর হয়তো ষড়যন্ত্রের শিকার নির্দোষ ৩২ জনের মতো আমাকেও আসামি হতে হবে। এই আর্তচিৎকার, আহাজারি হৃদয়ে রক্তক্ষরণ কে দেখবে?
আমি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। আমি এবং আমার নিষ্পাপ ভাইটাকে কোনো কারণ ছাড়া এতিম করে দেওয়ার বিচার চাই। অন্য দল ক্ষমতায় থাকলে মেনে নিতাম ভাগ্যকে। কিন্তু এই ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার বাংলাদেশে তার দলের একজন সাধারণ সম্পাদককে আওয়ামী লীগ সেজে থাকা স্বার্থপর বেইমানরা যেভাবে খুন করল আবার তার বিচার বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। তার আদর্শই কি জীবনের কাল হলো?
আওয়ামী লীগ করলেই কি সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে বাড়ি থেকে বের হয়ে লাশ হয়ে ফিরতে হয়? এই অন্যায়ের বিচার আপনার কাছে চাই আপা। আমি আমার মাসুম ভাই এবং অসহায় মায়ের চোখের পানির বিচার চাই, আমি পিতৃহত্যার বিচার চাই, খুনি আক্কাস মেরাজের ফাঁসি চাই।
মেয়র আক্কাসের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ : আশরাফুল ইসলাম বাবুল হত্যার সব আসামিকে গ্রেফতার এবং মেয়র আক্কাসের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশ করেছে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ। রোববার বিকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ শুরু করে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে একই স্থানে এসে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাজমুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ফকরুল হোসেন বিপ্লব, সাবেক বাউসা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সদস্য শফিকুল ইসলাম শফিক, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের উপজেলা সভাপতি আনোয়ার হোসেন মিল্টন, উপজেলা মহিলা আ.লীগের সভানেত্রী ফাতেমা খাতুন লতা ও বাজুবাঘা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজিম হাসান স্বদেশ প্রমুখ। বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, বাবুল হত্যা মামলায় প্রধান আসামি আক্কাস আলীসহ এ পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।