রাজধানীতে বর্ণিল রথযাত্রা উৎসব
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের পর বর্ণিল শোভাযাত্রায় শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব। ১৫ জুলাই বিকালে উল্টোরথের শোভাযাত্রা একই পথে ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে যাওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হবে উৎসবের।
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) আয়োজনে রোববার বিকাল ৩টায় প্রতি বছরের মতো বের করা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এটি স্বামীবাগ আশ্রম থেকে শুরু হয়ে জয়কালী মন্দির হয়ে শাপলা চত্বর আসে। তারপর গুলিস্তান হয়ে দোয়েল চত্বর, কার্জন হল ও জগন্নাথ হল ঘুরে পলাশী হয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে দুপুরে স্বামীবাগ আশ্রমে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমার মনে হয়, রথযাত্রা উৎসব দেশের প্রতিটি জেলায় হয়। ঈদের দিনে সবাই আমরা যেমন আনন্দ করি, রথযাত্রার দিনেও সবাই আমরা একসঙ্গে আনন্দ করি।
তিনি বলেন, তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে অগ্রসর বাংলাদেশ পেয়েছি। তার মূলে হলো আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে একসঙ্গে চলছি। আমরা জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি সাম্প্র্রদায়িক শক্তিকে কঠোরভাবে দমন করতে সক্ষম হয়েছি। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কোনো ভেদাভেদ নেই, এদেশ সবার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য সাঈদ খোকন বলেন, বঙ্গবন্ধু সাংবিধানিকভাবে আমাদের ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। আজ আমরা কথায় কথায় সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘু বলে থাকি। বাংলাদেশ সংবিধানে সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দই নেই।
ইসকন বাংলাদেশের সভাপতি সত্যরঞ্জন বাড়ৈ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সার্বিক নিরাপত্তায় ও সবার সহযোগিতায় হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে এবারের শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসবে শোভাযাত্রাটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া শোভাযাত্রায় অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায় নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকরাও শ্রম দিয়েছেন।
সনাতন ধর্মমতে, কৃষ্ণ ও বলরাম দুই ভাইয়ের কাছে একবার বোন সুভদ্রা নিজ নগর ভ্রমণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। বোনের ইচ্ছা পূরণের জন্য দুভাই একটি বিশাল রথ প্রস্তুত করেন এবং তাতে চড়ে তিনজনই নগর ভ্রমণে বের হন। মাঝপথে তারা গুন্ডিচায় তাদের মাসির বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং এখানে সাতদিন অবস্থান করেছিলেন। ঠিক নবম দিনে নগর ভ্রমণ শেষ করে তারা পুরীতে ফিরে আসেন। তারপর থেকে প্রতি বছর তিন ভাইবোন তাদের রথে নগর ভ্রমণে বের হন এবং মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরে যান। বলরামের রথ সামনে, বোন সুভদ্রার রথ মাঝখানে এবং জগন্নাথের রথ থাকে পেছনে। সেখান থেকেই প্রতিবছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এ উৎসব পালন করা হয়।