Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

দাফন সম্পন্ন

ডুমুরিয়ায় চেয়ারম্যান হত্যার পেছনে কোন্দল ও গ্রুপিং

Icon

খুলনা ব্যুরো

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম হত্যার পেছনে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও গ্রুপিং কাজ করেছে বলে মনে করছে স্থানীয়রা। গেল সংসদ-সদস্য নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের পক্ষে থাকা না থাকা নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। এসব বিষয় খতিয়ে দেখে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে মাঠে নেমেছে। চেয়ারম্যান হত্যার ঘটনায় রোববার রাত ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে, রোববার বাদ আসর মওলানা ভাসানী কলেজ মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে। চেয়ারম্যানের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

জানা যায়, ছাত্রলীগের হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি রবির। তিনি শরাফপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। সর্বশেষ ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। ৪২ বছর বয়সের মধ্যে পরপর তিনবার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। শেষ দুবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন।

তিনবারের চেয়ারম্যান হলেও খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন রবিউল। তার বাড়ি শরাফপুর ইউনিয়নের ভুলবাড়িয়া গ্রামে। তবে পরিবার নিয়ে থাকতেন খুলনা নগরের নিরালা আবাসিক এলাকায়। তার স্ত্রী সমাজসেবা অধিদপ্তর খুলনায় চাকরি করেন। তাদের ৮ ও দেড় বছরের দুই ছেলে আছে। রবিউল দুই ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে ষষ্ঠ।

খুলনা-৫ আসনের সংসদ-সদস্য নারায়ণ চন্দ চন্দের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত রবি। গেল সংসদ নির্বাচনেও তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নারায়ণ চন্দে র পক্ষে কাজ করেন। অপর সংসদ-সদস্য প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেনের লোকজন তা নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল। এই ইউনিয়নে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ওবায়দুল্লাহ। তিনি এখানে শেখ আকরাম হোসেনের আস্থাভাজন হিসাবে পরিচিত। এ দুজন সংসদ নির্বাচনে দুই প্রার্থীকে সমর্থন দেন। এতে উভয়ের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও দ্বন্দ্ব ছিল। ডুমুরিয়া উপজেলার মধ্যে শরাফপুর ইউনিয়নটি বিএনপি জামায়াতের ভোট ব্যাংক হিসাবে পরিচিত। রবিউল ইসলাম রবি স্থিরচিত্তের ও শান্ত প্রকৃতির হওয়ায় তিনি এ ইউনিয়ন থেকে বারবার বিজয়ী হন। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অপর প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ কাজ করত।

এদিকে, সদ্য শেষ হওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শেখ এজাজ আহমেদকে সমর্থন দেন। স্থানীয় এমপি নারায়ণ চন্দ চন্দও এজাজের পক্ষে ছিলেন। অপরদিকে শেখ ওবায়দুল্লাহ ছিলেন আজগর বিশ্বাস তারার পক্ষে। এই পক্ষ-বিপক্ষ নিয়েও নির্বাচনের আগে দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবিকে হত্যার পেছনে এসব কারণ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে পুলিশ। ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত সাহা বলেন, স্থানীয় কোন্দল গ্রুপিংয়ের বিষয়গুলো খুনের পেছনে আছে কিনা সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মোবাইল ট্রাকিংসহ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। কারা এই খুনের সঙ্গে জড়িত সে বিষয় শিগগির উদঘাটন করা হবে। খুনিদের ধরতে ডুমুরিয়া থানার একটি চৌকশ টিম শনিবার রাত থেকেই কাজ শুরু করেছে। ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ চন্দ বলেন, চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের হত্যাকাণ্ড জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। একসময়ের আতঙ্কের উপজেলা হিসাবে পরিচিত হলেও গত প্রায় ২২ বছরে এ ধরনের কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। ওই সময় যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতেন, তারা এখন ছদ্মবেশে এলাকায় আছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম