বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শিখবে সন্তান, কিন্তু কীভাবে? জানাচ্ছেন মনোবিদ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম
আপনার সন্তান ছোট থেকে বড় হওয়ার সময়েই ধীরে ধীরে জীবনের প্রয়োজনীয় জিনিস শিখে থাকে। এ সময় ভালো অভ্যাস তৈরি করতে পারলে, তা তার বিকাশে সহায়ক হবে। কিন্তু কীভাবে তাকে জীবনের পাঠ দেবেন? এ বিষয়ে মনোবিদ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন— আপনার সন্তান বড় হওয়ার সময় কখন, কোন কাজটি কীভাবে শিখবে।
সব মা-বাবাই চান তাদের সন্তান বড় হোক, মানুষের মতো মানুষ হোক। কিন্তু সন্তান পালন কি মুখের কথা? বড় হওয়ার পথে ভুলভ্রান্তি শিশুর ব্যক্তিত্বে ও মানসিকতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আবার বাবা-মায়ের আদর, নিরাপত্তা, মূল্যবোধ ও সঠিক অভিভাবকত্বে বেড়ে ওঠা শিশু হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যতের সুনাগরিক।
খুদে বড় হওয়ার সময়েই শিখবে ও জানবে। কোন বয়সে তাকে কীভাবে শেখাবেন, কোন অভ্যাস তৈরি করবেন এবং কীভাবে সে বড় হলে তার ব্যক্তিত্বের যথাযথ বিকাশ হতে পারে, সেই পরামর্শ দিয়েছেন মনোবিদ মোহিত রণদীপ। জেনে নিন—
১. পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের ব্যবহার
জীবনের শিক্ষা হোক পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের ব্যবহারে। মোবাইল বা টিভির পর্দায় দীর্ঘক্ষণ আটকে না থেকে রূপ, রঙ ও গন্ধ খুদেকে চেনানোর প্রয়োজন রয়েছে। মোহিত বলেন, বিভিন্ন শব্দ, বর্ণ ও স্বাদের সঙ্গে খুদের পরিচয় ঘটাতে হবে। তবেই তার ইন্দ্রিয়গুলোর বিকাশ ঘটবে। তার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হবে। দৈনন্দিন যাপন থেকেই শিশু ধীরে ধীরে প্রয়োজনীয় জিনিস ও কাজ শিখবে।
২. স্বাবলম্বী
যতই ছোট হোক সন্তানের স্বাবলম্বী হওয়ার শিক্ষা ছোট থেকেই হওয়া দরকার। হাঁটতে গেলে পড়ে যাবে। কিন্তু নিজের চেষ্টাতেই যে উঠে দাঁড়াতে হয়, সেই অনুপ্রেরণা গোড়াতেই দিতে হবে। সব কাজ করে দেওয়া নয়, বরং বয়স অনুযায়ী তাকে নিজের কাজ নিজে করার শিক্ষা দেওয়া জরুরি। এ অভ্যাস তাকে ভবিষ্যতে স্বনির্ভর করে তুলবে।
৩. আবেগের বহির্প্রকাশ
আবেগ ও অনুভূতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তার বহির্প্রকাশ জরুরি। দিনের শেষে তার কথারও বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। কোন কথায় কেউ দুঃখ পায় বা পেতে পারে, সেই বোধ ছোট থেকে হলে কথা বলার বিষয়ে খুদে ভাববে। কাজের পরিণতি সম্পর্কে সচেতন হবে।
৪. সহযোগিতা-সহমর্মিতা পাঠ
অন্যকে সম্মান করা, সহযোগিতা ও সহমর্মিতার পাঠ ছোট থেকে দেওয়া দরকার। অন্যের দুঃখে পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষা ভবিষ্যতে একজন শিশুকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি কাজের পরিণতি সম্পর্কেও শিশুকে বোঝানো প্রয়োজন। হয়তো বন্ধুর কোনো জিনিস ভালো লেগেছে বলে সেটি সে বাড়ি নিয়ে চলে এসেছে। কেন ভুল ও কোথায় ভুল তা বুঝিয়ে জিনিসটি পর দিন তার হাত দিয়েই ফেরত দেওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন মনোবিদ মোহিত।
৫. খেলাধুলা
শিশুর শারীরিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার প্রয়োজন। ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে তা সম্ভব নয়। ভারতীয় জীবনশৈলীবিদ লিউক কোটিনহোর পরামর্শ দিয়েছেন— শিশু যে ধরনের খেলা ভালোবাসে, সে ব্যাপারে তাকে উৎসাহ দিতে হবে। নাচ, ক্রিকেট ও সাইকেল চালানোসহ পছন্দের যে কোনো খেলা বা সহজাত শরীরচর্চায় তাকে যুক্ত করা প্রয়োজন। এতে শরীর ও মন— দুইয়েরই বিকাশ হবে।