ভারতকে ফাইনালে তুলে ‘চেজ মাস্টার’ কোহলি ভাসছেন প্রশংসায়

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৫, ০৬:১৮ পিএম
-67c84108dde25.jpg)
সোনালি সব দিনে বিরাট কোহলির রান তাড়ার ক্ষমতা ছিল অতিমানবীয়। সে সোনালি সব দিন এখন আর নেই। তবে কোহলি এখনও যে রান তাড়ার ‘মাস্টার’, তার প্রমাণ দেন হরহামেশাই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে যেমনটা দেখালেন।
মঙ্গলবার দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কোহলি করেন ৮৪ রান। যখন তিনি আউট হন, তখন ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ৪০ রান ৪৪ বলে। ১১ বল বাকি থাকতেই ভারত জয় নিশ্চিত করে।
রবিবার দুবাইয়ে ফাইনালে তারা দক্ষিণ আফ্রিকা বা নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে। এই ইনিংস খেলার মধ্য দিয়ে কোহলি ওডিআই চেজে ৮,০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অপরাজিত ১০০ রান করেছিলেন কোহলি।
ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দর শেবাগ কোহলির প্রশংসা করে বলেন, ‘তার নাম চেজ মাস্টার কেন, তা বোঝাই যাচ্ছে। তার চেজ করার সেঞ্চুরি প্রায় ৩০-৪০টি। রান তাড়া করার সময় সবচেয়ে বেশি রান তারই। এই রান তাড়া করা তার জন্য কিছুই ছিল না, সে হাসতে হাসতে এটি করেছে।’
৮,০৬৩ রান নিয়ে কোহলি এখন একদিনের ক্রিকেটে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে ৬৪.৫০ গড় ধরে রেখেছেন। তার ওপরে আছেন শুধুমাত্র কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার। তার রান ৮,৭২০।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইনিংসটিতে মাত্র পাঁচটি চার হাঁকিয়েছেন তিনি। তবে অসাধারণ ফিটনেসের কারণে দ্রুত সিঙ্গেল-ডাবলস নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রেখেছেন কোহলি।
সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইন কোহলির ব্যাটিংয়ের কৌশল সম্পর্কে বলেন, ‘সে ডট বল কমিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখে। একটা সময় ২৫ বলে তার ২৩টি সিঙ্গেল এবং একটি ডাবল ছিল। সে প্রতিপক্ষের অধিনায়ককে এমন পরিস্থিতিতে ফেলে যেখানে ফিল্ডিং পরিবর্তনের সুযোগ কম থাকে এবং সঠিক সময়ে বাউন্ডারি আদায় করে নেয়।’
অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ বলেন, ‘সে সম্ভবত সেরা চেজার, যাকে আমরা দেখেছি। সে আমাদের বিপক্ষে বহুবার এটা করেছে। সে খেলার গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, নিজের শক্তির জায়গায় খেলে এবং ম্যাচকে গভীরে নিয়ে যায়।’
২০০৮ সালে অভিষেকের পর এটি কোহলির ৩০১তম ওডিআই ম্যাচ, যেখানে তিনি ৭৪টি ফিফটি করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তার সেঞ্চুরির সংখ্যা ৮২টি।
কোচ গৌতম গম্ভীর কোহলির ম্যাচের পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, ‘সে অসাধারণ ওডিআই ব্যাটসম্যান। জানে কিভাবে নিজের ইনিংস সাজাতে হয়, প্রথমে ব্যাটিং করুক বা চেজ করুক, সে দ্রুত কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে পারে।’
টেস্টে রানের খরা এবং অবসরের গুঞ্জনের মধ্যেই এই টুর্নামেন্টে খেলতে এসেছিলেন কোহলি ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তবে তারা প্রমাণ করেছেন যে, ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তাদের সামর্থ্য এখনও অটুট।
গম্ভীর বলেন, ‘আপনি শুধুমাত্র টেস্টের পারফরম্যান্স দেখে কোনো খেলোয়াড়কে বিচার করতে পারেন না। তারা এই ফরম্যাটে বছরের পর বছর ধরে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স করে আসছে। বড় টুর্নামেন্টে তারা পারফর্ম করবে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’