
আবারও পরিবর্তনের ঝড় উঠেছে পাকিস্তান দলে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন পাঁচ ম্যাচের সিরিজের জন্য মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজমকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ঘোষিত নতুন স্কোয়াডে বেশ কিছু চমক রয়েছে।
সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যর্থতার পর প্রথমবারের মতো দল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান, যেখানে সহ-অধিনায়ক ছিলেন সালমান আগা। এবার তাকেই টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেছেন শাদাব খান, যিনি এবার সহ-অধিনায়কও হয়েছেন। তবে ওডিআই দলে অধিনায়কত্ব ধরে রেখেছেন রিজওয়ান, যদিও সেখানে বাদ পড়েছেন পাকিস্তানের অন্যতম সেরা পেসার শাহীন আফ্রিদি।
পিসিবির দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকার পর দলে ফিরেছেন মোহাম্মদ হারিস। তবে সাইম আইয়ুব এখনো চোট কাটিয়ে ফিরতে পারেননি। নতুন মুখ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ২২ বছর বয়সি উইকেটকিপার হাসান নওয়াজ, যিনি এখন পর্যন্ত মাত্র ২১টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। এছাড়া অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন ২৭ বছর বয়সী পাওয়ার-হিটার আবদুল সামাদ, যিনি এখনো পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলার সুযোগ পাননি। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে দারুণ পারফরম্যান্সের সুবাদে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের ব্যাটার ওমায়ের ইউসুফ দলে জায়গা পেয়েছেন।
বোলিং আক্রমণে বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের বোলিং ইউনিটই প্রায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। দলে আছেন শাহীন আফ্রিদি ও হারিস রউফ, তবে নেই নাসিম শাহ। স্পিন বিভাগে সুফিয়ান মুকিম ও আবরার আহমেদ জায়গা ধরে রেখেছেন, আর দলে যুক্ত হয়েছেন খুশদিল শাহ।
এই পরিবর্তনের ফলে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে ৫ ম্যাচ খেলেই অধ্যায় শেষ হলো মোহাম্মদ রিজওয়ানের। নেতৃত্ব পাওয়ার পর পাঁচটি টি-টোয়েন্টিতে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি, পাকিস্তান হেরেছে প্রতিটি ম্যাচেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি, তখন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সালমান আগা, যেখানে পাকিস্তান ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জেতে।
বাবরের বাদ পড়ার বিষয়টিও ইঙ্গিত দিচ্ছে যে পাকিস্তান এবার ব্যাটিং লাইনআপে বড় পরিবর্তন আনতে চাইছে। ২০২০ সাল থেকে বাবর-রিজওয়ান ওপেনিং জুটি গড়ে তুললেও শুরু থেকেই এটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল। অনেকেই তাদের ব্যাটিং স্টাইলকে টি-টোয়েন্টির জন্য খুব বেশি রক্ষণাত্মক মনে করেন। তবে দলের ব্যর্থ মিডল অর্ডারের বিপরীতে তাদের ধারাবাহিকতা পাকিস্তানের জন্য নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে এসেছে। তবু এবার পাকিস্তান নতুন কিছুর দিকে ঝুঁকছে।
ওয়ানডে দলে অবশ্য এত বড় পরিবর্তন আসেনি। প্রধান ব্যতিক্রম হিসেবে বাদ পড়েছেন শাহীন আফ্রিদি, যিনি দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তানের সেরা বোলার ছিলেন। অধিনায়ক হিসেবে রিজওয়ানই থাকছেন, আর বাবরও দলে রয়েছেন। ফেরানো হয়েছে আবদুল্লাহ শফিককে, যিনি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে ছিলেন না। এছাড়া ওয়ানডে দলে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার আকিফ জাভেদ, আর স্পিন বিভাগে সুফিয়ান মুকিমও ফিরেছেন।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তান পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে ১৬ মার্চ থেকে, এরপর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও মুখোমুখি হবে দুই দল।
পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড: হাসান নওয়াজ, ওমায়ের ইউসুফ, মোহাম্মদ হারিস, আবদুল সামাদ, সালমান আগা (অধিনায়ক), ইরফান নিয়াজি, খুশদিল শাহ, শাদাব খান, আব্বাস আফ্রিদি, জাহানদাদ খান, মোহাম্মদ আলী, শাহীন আফ্রিদি, হারিস রউফ, সুফিয়ান মুকিম, আবরার আহমেদ, উসমান খান।
পাকিস্তান ওয়ানডে স্কোয়াড: মোহাম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক), সালমান আগা, আবদুল্লাহ শফিক, আবরার আহমেদ, আকিফ জাভেদ, বাবর আজম, ফাহিম আশরাফ, ইমাম-উল-হক, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, ইরফান নিয়াজি, নাসিম শাহ, সুফিয়ান মুকিম, তাইয়াব তাহির।