
ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন চমকের নাম বরুণ চক্রবর্তী। প্রথমে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। তারপর আন্তর্জাতিক এক দিনের ম্যাচ। বল হাতে দাপট দেখাচ্ছেন ভারতের এই স্পিনার।
২০২১ সালে এই দুবাইয়ের মাটিতেই থমকে গিয়েছিল বরুণের আন্তর্জাতিক কেরিয়ার। চার বছর পর সেই দুবাইয়েই নবজন্ম হল তাঁর। অথচ, ক্রিকেটার হওয়ার ইচ্ছাই ছিল না তাঁর। তিনি চেয়েছিলেন সিনেমা বানাতে।
রোববার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন বরুণ। দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচেই পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজির গড়েছেন তিনি। ম্যাচ শেষে সাংবাদিক বৈঠকে নিজের কেরিয়ারের কথা জানিয়েছেন বরুণ।
তিনি বলেন, “আমি ক্রিকেট অনেক দেরিতে শুরু করেছি। ২৬ বছর বয়সে মন দিয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করি। তার আগে আমার অন্য স্বপ্ন ছিল। স্থপতি হতে চেয়েছিলাম। সিনেমা বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ২৬ বছরের পর থেকে শুধু ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নই দেখেছি। সেই স্বপ্নই ধীরে ধীরে সত্যি হচ্ছে।”
২০২১ সালে আইপিএলের পারফরম্যান্সের জন্য সে বার টি ২০ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন বরুণ। কিন্তু গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচে একটিও উইকেট পাননি। ভারতও গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে গিয়েছিল। সে বারের সঙ্গে এ বারের পরিবেশের যে কোনও মিল নেই তা স্বীকার করেছেন ভারতীয় স্পিনার।
বরুণ বলেন, “সে বার খুব শিশির পড়ছিল। রাতে বল ধরতে সমস্যা হচ্ছিল। আমি যে খুব খারাপ বল করেছিলাম, তা নয়। কিন্তু আমরা জিততে পারিনি। কিন্তু এ বার আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি। জিতছি। তাই ভালো লাগছে।”
রোবববার যখন প্রথম বার বল করতে গিয়েছিলেন, তখন চার বছর আগের স্মৃতি মনে পড়ছিল বরুণের। আত্মবিশ্বাস একটু কম ছিল। কিন্তু অধিনায়ক রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও হার্দিক পাণ্ড্য তাঁকে ভরসা দেন। বরুণ বলেন, “প্রথম স্পেল করতে যাওয়ার সময় আত্মবিশ্বাস একটু কম ছিল। চার বছর আগে এই মাঠে কী হয়েছিল, সেই কথা মনে পড়ছিল। নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হচ্ছিল। সেই সময় রোহিত ভাই, বিরাট ভাই ও হার্দিক ভাই এসে বলে, নিজেকে শান্ত রাখতে। ওরা বার বার এসে কথা বলছিল। সেটা কাজে লেগেছে। আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।”
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পরেও হাল ছাড়েননি বরুণ। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। নিজের বোলিং নিয়ে পরিশ্রম করেছেন। নতুন বল শিখেছেন। ফলে এখন অনেক বেশি অস্ত্র তাঁর কাছে রয়েছে। গত বারের আইপিএলে কেকেআরকে চ্যাম্পিয়ন করতে বড় ভ‚মিকা নিয়েছেন বরুণ।
সেই পারফরম্যান্স ভারতীয় দলে তার জায়গা করে দিয়েছে। টি ২০তেও নজর কেড়েছেন তিনি। প্রথমে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে বরুণ ছিলেন না। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তার পারফরম্যান্স দেখে শেষ মুহূর্তে যশস্বী জয়সওয়ালের বদলে তাঁকে নেওয়া হয়েছে। তাকে নিয়ে যে গৌতম গম্ভীর, অজিত আগরকরেরা কোনও ভুল করেননি, তার প্রমাণ দিচ্ছেন বরুণ। যে দুবাইয়ে তাঁর কেরিয়ার শেষ হতে চলেছিল, সেই দুবাইয়েই নবজন্ম হয়েছে তার।