
ছবি: সংগৃহীত
শব্দটা বার্সেলোনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর নামের একাংশ। তাই যেন এ শব্দটা দেখলেই বার্সেলোনা তেঁতে ওঠে বেশ করে। অন্তত এই মৌসুমে তো বটেই। দলটার ট্র্যাক রেকর্ড কিন্তু সেটাই বলছে। চলতি মৌসুমে রিয়াল দেখলেই বার্সার ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলার তীব্র বাসনার দেখা মেলে।
তারই ধারাবাহিকতা তারা ধরে রাখল রোববার রাতেও। ‘রিয়াল’ সোসিয়েদাদকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে লা লিগার শীর্ষস্থানটাও এককভাবে দখল করে নিয়েছে কোচ হানসি ফ্লিকের শিষ্যরা।
‘রিয়াল’ দেখলেই বার্সার জ্বলে ওঠার শুরু আগস্টে। সে মাসের শেষ দিনে রিয়াল ভায়াদোলিদকে দলটা উড়িয়ে দিয়েছিল ৭-০ গোলে। এরপর অক্টোবরে রিয়াল মাদ্রিদকে তাদেরই মাঠে ৪-০ গোলে হারায় ফ্লিকের দল। মাঝের দুবার ‘রিয়াল’ নামের দলের বিপক্ষে অবশ্য হোঁচট খেয়েছে বার্সা, সে আলোচনাটা একটু পরই নাহয় করা যাবে।
বার্সা আবার ধারায় ফিরল মাদ্রিদকে দেখেই। স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে সেবার ৫-২ গোলে হারাল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের। এর ঠিক পরের ম্যাচে আরেক ‘রিয়াল’ বেতিসকে উড়িয়ে দিল ৫-১ গোলে, যাতে করে আগের মাসে তাদের মাঠে লিগ ম্যাচে ড্র করে পয়েন্ট খোয়ানোর শোধবোধ কিছুটা হলেও করা হয় দলটার। আরও এক রিয়াল, যাদের মাঠে হোঁচট খেয়েছিল কাতালানরা, সে দলটা ছিল রিয়াল সোসিয়েদাদ। ডিসেম্বরে তাদেরই মাঠে ১-০ গোলে হেরেছিলেন রাফিনিয়ারা।
সে সোসিয়েদাদই রোববার রাতে ছিল বার্সার প্রতিপক্ষ। তাদের দেখে এবার তেঁতে উঠলেন বার্সার তরুণ তুর্কিরা। জেরার্দ মার্তিন আর মার্ক কাসাদো, দুজনেরই বার্সার হয়ে অভিষেক গোলের দেখা পেয়ে গেলেন এ রাতে। কাজটা সহজ হয়ে গিয়েছিল, রোনাল্ড আরাউহো আর রবার্ট লেভান্ডভস্কির গোলে ৬০ মিনিটেই ম্যাচটার সব হিসাব শেষ করে দেয় বার্সা।
স্প্যানিশ শব্দ ‘রিয়াল’ এর মানে হচ্ছে রাজকীয়। আর বার্সা যে আজকের বার্সা হয়ে ওঠার পেছনের গল্প, ‘মোর দ্যান আ ক্লাবের’ গল্প, তার পেছনে জনতার কাতারে থাকাটা কাজ করেছে ভালোভাবে। এই জনতার কাতারে থাকতে গিয়ে স্প্যানিশ ‘রাজকীয়’ কর্তৃপক্ষ, সরকারের রোষানলে কম পড়তে হয়নি ক্লাবটাকে। চলতি মৌসুমে ‘রিয়াল’দের দেখলেই বার্সার এভাবে তেঁতে ওঠা যেন অজান্তে নৈবেদ্য তুলে দিচ্ছে সেসব সংগ্রামের বেদিতে!
এ ম্যাচে গল্প আছে আরও একটা। বার্সা তার আগের লেগটা যখন সোসিয়েদাদের মাঠে খেলেছিল, সে ম্যাচে গ্যালারির একটা দৃশ্য আন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়েছিল বিদ্যুতের বেগে। ৩৩ মিনিটে শেরালদো বেকারের ভবিতব্য জয়সূচক গোলের পর পুরো সোসিয়েদাদের গ্যালারি যখন উল্লাসে মত্ত, তার মাঝে পড়ে গিয়েছিলেন এক বার্সা ভক্ত, বহু কষ্টে দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে ছিলেন সোসিয়েদাদ অধ্যুষিত গ্যালারিতে। ফিরতি লেগে সে দলটাকে এভাবে উড়িয়ে দেওয়াতে তার চেয়ে খুশি নিশ্চয়ই কোনো ভক্ত হননি রোববারে!