Logo
Logo
×

খেলা

বিপিএল মানেই বিতর্ক

Icon

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৬ পিএম

বিপিএল মানেই বিতর্ক

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) দারুণ সাফল্য এবং চাকচিক্য দেখে মুগ্ধ হন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্তারা। তাই তো আইপিএলের আদলে ২০১২ সালে শুরু করেন ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)

কিন্তু বিপিএলের শুরু থেকেই বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বিসিবির। কোনো না কোনো ইস্যুতে প্রতি আসরেই বিতর্ক থেকেই যাচ্ছে। বিপিএলের চলতি ১১তম আসরেও তার ব্যতিক্রম নয়। আসরের শুরু থেকেই বিতর্ক হচ্ছে। তবে অতীতের সব বিতর্ককে আজ যেন সীমা ছাড়িয়ে গেল। 

পারিশ্রমিক ইস্যুতে আগের আসরগুলোতেও কম-বেশি সমালোচনা ছিল; কিন্তু আজ রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির পেশাদারিত্বের ঘাটতি চরমভাবে ফুটে ওঠে। কয়েক দফা পদক্ষেপ নিয়ে তাদের ক্রিকেটাররা অনুশীলন বয়কট করেছেন। আজ ম্যাচ বয়কট করেছেন রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটাররা। স্থানীয় ক্রিকেটারদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে মাঠে নামাতে পারলেও বিদেশিদের মাঠে আনতেই পারেনি রাজশাহী।

রোববার বিসিবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিদেশি খেলোয়াড়রা না থাকায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আজকে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে শুধুমাত্র বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের নিয়ে মাঠে নামার জন্য বিশেষ অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছে দুর্বার রাজশাহী। তাদের অনুরোধ বিবেচনা করে ম্যাচ প্লেয়িং কন্ডিশনের ১.২.৮ ক্লজ অনুযায়ী টেকনিক্যাল কমিটি এ ম্যাচের জন্য শুধু বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের নিয়ে মাঠে নামতে দুর্বার রাজশাহীকে অনুমতি দিয়েছে।

বিপিএলে এবারের আসরের শুরুতেই টিকিট নিয়ে চরম বিতর্ক হয়। স্টেডিয়ামের বুথে এসে টিকিট না পেয়ে স্টেডিয়ামের গেট ভাঙেন আগ্রহী দর্শকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

বিপিএলের ঢাকাপর্ব শেষে সিলেটেও ছিল একই দৃশ্যপট। সেখানেও বিতর্ক হয়। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল ও ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব, বিশেষ করে বিসিবি সভাপতি ও পরিচালকের কথার লড়াই। সেই বিতর্ক টুর্নামেন্টের মূল উদ্দেশ্যকে আড়াল করে দেয়। 

চট্টগ্রামপর্বে সামনে আসে বিপিএলের সবচেয়ে বড় কলঙ্ক। হঠাৎ করে জানা যায়- দুর্বার রাজশাহী দলের খেলোয়াড়দের বেশিরভাগই চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক পাননি। কিছু বিদেশি খেলোয়াড় আংশিক অর্থ পেলেও স্থানীয় খেলোয়াড়রা ছিলেন চরম হতাশায়। যে কারণে অনুশীলন বর্জন করেন রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। এরপর ম্যাচ না খেলারও হুমকি দেন তারা; যা আজ বাস্তবে দেখা গেল।

এরপর বিপিএলে ম্যাচ ফিক্সিং ও স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠে। বোলারদের অস্বাভাবিক ডেলিভারি, ইচ্ছাকৃত নো বল এবং ওয়াইড বোলিংয়ের মতো ঘটনাগুলো ফিক্সিংয়ের সম্ভাবনা উসকে দেয়। এরপর তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমানের অপেশাদার আচরণ। তারা মাঠেই তর্কে জড়িয়ে পড়েন।

চলতি বিপিএলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের আচরণ। তারা বিদেশি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ও মেন্টরদের জন্য অনেক টাকা ব্যয় করলেও স্থানীয় খেলোয়াড়দের প্রাপ্য অর্থ দিতে গড়িমসি করেন। পারভেজ হোসেন ইমনের মতো তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের অর্থ আটকে রাখা এবং মালিকদের আত্মতৃপ্তির অজুহাত দেখানো পেশাদার ক্রিকেটের জন্য লজ্জাজনক।

অথচ এবারের বিপিএল শুরুর আগে আয়োজকরা ঘোষণা দিয়েছিলেন, এটি হবে সর্বকালের সেরা বিপিএল। রাজনৈতিক পালাবদলের পর নতুন উদ্যমে টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। বলা হয়, নতুন ব্যবস্থাপনা, উন্নত আয়োজন এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বিপিএলকে এবার সত্যিকার অর্থেই অন্য উচ্চতায় নেওয়া হবে। 

কিন্তু বাস্তবতা হয়েছে সম্পূর্ণ উল্টো। মাঠে কয়েকটা ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা ও ব্যাটিং উইকেটের প্রশংসা থাকলেও পুরো আয়োজনে অপেশাদারিত্ব, আর্থিক জটিলতা এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের দেউলিয়াপনা সেই প্রতিশ্রুতিকে ম্লান করে দিয়েছে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম