টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। তবে তাদের পারফর্ম্যান্স নিয়ে ভাবনাটা সে বিশ্বকাপজয়ের পর থেমে যায়নি, বরং নতুন কোচ গৌতম গম্ভীরের অধীনে তা আরও বেড়েছে।
টি-টোয়েন্টি মানে উদ্ভাবনের খেলা। প্রথাগত ক্রিকেটকে খানিকটা দূরে ঠেলে দিয়ে পরিস্থিতিটা তাৎক্ষনিক সামাল দেওয়ার উদ্ভাবনের ওপরই নির্ভর করে দলের সাফল্য-ব্যর্থতা। ভারত আরও এক উদ্ভাবনের পথে হাঁটছে এখন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর ঠিক আগে বিষয়টা জানালেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব আর অক্ষর পাটেল। প্রতিপক্ষকে চমকে দিতে নতুন এক কৌশল নিয়ে মাঠে নামবে ভারত।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভারতের হয়ে ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন সাঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা। দুজনই ইনিংসের শুরু থেকে প্রতিপক্ষের বোলিং গুঁড়িয়ে দিতে চান আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে।
ভারতের চমকটা কিন্তু এরপরই। কী সে চমক? সেটাই জানিয়েছেন ভারতের অধিনায়ক আর সহ অধিনায়ক। দুজনই জানিয়েছেন, ব্যাটিং অর্ডারের তিন থেকে সাত নম্বরে কে নামবেন, আগে থেকে স্থির রাখছে না দল। প্রয়োজন অনুযায়ী বদলে দেওয়া হতে পারে ব্যাটিং অর্ডার।
আগের দিন অক্ষর পাটেল বলেছিলেন, ‘আমরা আম্মাদের ওপেনিং জুটিটা ঠিক রাখছি। তিন থেকে সাত নম্বরে সবাইকে বলেছি খোলা মন নিয়ে থাকতে, পরিস্থিতি, কম্বিনেশন আর ম্যাচ আপের কথা মাথায় রেখে নামতে হবে ব্যাটিংয়ে।’
সঙ্গে ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতি-অবনমন আরও দুটো বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে। কী সে দুই বিষয়? অক্ষরের উত্তর, ‘ব্যাটার সবসময় কোন পজিশনে ব্যাট করবে, সেটা সবসময় নির্দিষ্ট থাকবে না। ওখানে ব্যাট করা সবার জন্য বিষয়টা একই থাকছে। এটা নির্ভর করবে কে ভালো দিন কাটাচ্ছে, কে অনুশীলন সেশন কেমন কাটাচ্ছে তার ওপর। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিষয়টাই হচ্ছে ঠিক ব্যাটারকে ঠিক সময়ে ব্যবহার করা।’
তিন থেকে সাত নম্বরে মোটামুটিভাবে ভেবে রাখা হয়েছে সূর্যকুমার, তিলক ভার্মা, রিঙ্কু সিং, হার্দিক পান্ডিয়া এবং অক্ষর পাটেলকে। তবে কে কখন নামবেন, বদলে যেতে পারে ম্যাচের পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুযায়ী। কখনও তিন নম্বরে হার্দিক বা রিঙ্কুকে নামিয়ে প্রতিপক্ষ বোলিং ছারখার করে দেওয়ার নকশা নেওয়া হতে পারে। কখনও আবার অক্ষর কিংবা তিলকের ব্যাটিং অর্ডার বদলে বিপক্ষকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার চাল নেওয়া হতে পারে।
বিষয়টাকে যতটা নতুন হিসেবে দেখা হচ্ছে, ততটা নতুনও অবশ্য নয়। ২০২৩ বিশ্বকাপে ভারত হেঁটেছে এই পথ ধরে, রোহিত শর্মা একাধিকবার কথা বলেছেন এ নিয়ে। ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের সবশেষ শিরোপাজয়ের সঙ্গেও মিশে আছে এই ব্যাটিং অর্ডারে অদল বদলের এক ঘটনা।
২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে যুবরাজ সিংয়ের বদলে ব্যাটিং অর্ডারে ওপরের দিকে উঠে এসেছিলেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। তিনি যখন এসেছেন, তখন ডানহাতি দুই পেসার আর স্পিনার ছিলেন লঙ্কানদের আক্রমণে। সে কারণে বাঁহাতি যুবরাজের জায়গায় ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন ধোনি। পরের গল্পটা তো আপনি জানেনই। সে পথেই এখন এগোতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টির নতুন ভারত।