অন্ধের ফুটবল লিগ, একদল লড়াকু যুবকের প্রতিকূলতা জয়
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:২৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
অন্ধ; চলার প্রতিটি পদক্ষেপে যাকে হাজারো বাধা বিপত্তি পেরোতে হয়। চলতে হয় অন্যের ওপর ভর করে। মানুষ হয়ে জন্মানোর পরও যারা আদতে বেঁচে থাকে পরজীবীর মতো। তবে এই হিসেব সব অন্ধের বেলায় খাটে না। কেউ কেউ আছেন যারা সকল প্রতিকূলতা জয় করেন। পরজীবী না হয়ে জীবনে চলার পথ খুঁজে নেন। নিয়মিত কাজ করেন। চোখে আলো না দেখলেও জ্বালান আলো।
এবার তেমনই এক কাণ্ড করেছেন দক্ষিণ সুদানের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অন্ধ যুবকরা। কষ্টের পটভূমিতে লিখেছেন হার না মানার এক গল্প। লড়াকু এই যুবকরা সব প্রতিকূলতা জয় করেছেন। নিয়মিত জীবনের বাইরে গিয়ে ফুটবল খেলে বিনোদিত হচ্ছেন। খেলছেন অন্ধের ফুটবল লিগে। যা খেলতে নিজেদের মতো করে অভিনব উপায়ও বের করেছেন তারা।
অন্ধের ফুটবল! শুনতে অবাক করার মতো হলেও বিষয়টি বাস্তবে রূপ দিয়েছেন একদল তরুণ। দক্ষিণ সুদানের জুবায় প্রিমিয়ার ব্লাইন্ড ফুটবল লিগের সদস্যরা দেখিয়েছেন অন্ধদের মুক্তির সেই পথ।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে- চোখে না দেখলে ফুটবলে লাথিই বা দেন কী করে তারা। গোলপোস্টে বলই বা রাখেন কি করে। তাছাড়া মাঠে একে অন্যের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ায় বা এড়িয়ে যান কীভাবে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানা যায় খেলাটির নিয়ম দেখলে।
যে ফুটবলটি খেলায় ব্যবহার করেন তারা সেটা এক ধরনের শব্দ তৈরি করে। যার মাধ্যমে তারা বুঝতে পারেন ফুটবল থেকে তারা ঠিক কত দূরে রয়েছেন। আর বলের কাছে যাওয়ার আগে ‘ভয়’ বলে চিৎকার করেন তারা। যার বাংলা আমি আসছি। যা প্রতিপক্ষকে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে সতর্ক করে এবং আঘাত কমায়।
আর খেলোয়াড়দের ভাই-বোনরা তাদের শট গোলপোস্টে রাখতে সাহায্য করেন। এক্ষেত্রে গোলপোস্টের দু পাশে আঘাত করে শব্দ তৈরি করেন তারা। যা শুনে সেই দিকেই শট নেন অন্ধ ফুটবলাররা। এক্ষেত্রে সব ফুটবলার অন্ধ হওয়ার পরও তাদের সবার চোখ বেঁধে দেওয়া হয়; যেন প্রত্যেক ফুটবলারের সমান দৃষ্টি নিশ্চিত হয়।
মূলত এই খেলাটির মাধ্যমে অন্ধদের আত্মবিশ্বাস ফিরেয়ে দেওয়া হয়। তারা কীভাবে ভয় ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন এবং অনুরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে যেন পিছিয়ে পড়তে না হয় সেই শিক্ষাই পান তারা।
আলজাজিরা থেকে অনুদিত